অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ভালো ব্যবসা দেখিয়ে শেয়ারবাজারে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রিমিয়ামে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৫০ কোটি টাকার বিশাল অর্থ উত্তোলন করে লুব-রেফ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মাত্র ৩ বছরের ব্যবধানেই সেই কোম্পানি এখন লোকসানে। যে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাসে আর্থিক হিসাবে সমস্যা ছিল এবং প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য না বলে তৎকালীন কমিশনকে সতর্ক করেছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক নির্বাহি পরিচালক।

শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনে কোম্পানিগুলোর প্রতারণা অনেক পুরাতন ও প্রতিষ্ঠিত ...

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ভালো ব্যবসা দেখিয়ে শেয়ারবাজারে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রিমিয়ামে সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৫০ কোটি টাকার বিশাল অর্থ উত্তোলন করে লুব-রেফ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মাত্র ৩ বছরের ব্যবধানেই সেই কোম্পানি এখন লোকসানে। যে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাসে আর্থিক হিসাবে সমস্যা ছিল এবং প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য না বলে তৎকালীন কমিশনকে সতর্ক করেছিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক নির্বাহি পরিচালক।

শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলনে কোম্পানিগুলোর প্রতারণা অনেক পুরাতন ও প্রতিষ্ঠিত খবর। যা থেকে বের করে আনতে পারেনি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বিগত কমিশনগুলো। যাতে কোম্পানিগুলো আয় বা পণ্য বিক্রি বেশি দেখিয়ে ও ব্যয় কমিয়ে কৃত্রিম মুনাফা দেখিয়ে থাকে।

এই প্রতারণা থেকে বাদ যায়নি বিতর্কিত ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্টের হাত ধরে শেয়ারবাজারে আসা লুব-রেফ বাংলাদেশও। ব্যবসায় হিমশিম খাওয়া এ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজারে আসার আগে কৃত্রিম মুনাফা দেখায়। যা তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে বেশি করে ফুটে উঠেছে। এখন কোম্পানিটির লোকসান। যে কোম্পানিটির প্রসপেক্টাস দেখেই বিভিন্ন অনিয়ম পেয়েছিল বিএসইসির তৎকালীন ক্যাপিটাল রেইজিং বিভাগের কর্মকর্তারা। যাদের কথাকে কর্ণপাত না করে দূর্বল লুব-রেফকে ১৫০ কোটি টাকা উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছিল বিগত কমিশন।

আরও পড়ুন....

সাড়ে ৫ কোটি টাকার জমিতে ৪৯ কোটি টাকার ভূয়া উন্নয়ন ব্যয়

বিএসইসির কোয়ারিতেও মিথ্যা তথ্য দেয় লুব-রেফ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক নির্বাহি পরিচালক অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, লুব-রেফ বাংলাদেশ প্রিমিয়াম পাওয়ার যোগ্য ছিল না। কৃত্রিম সম্পদ দেখিয়ে বুক বিল্ডিংয়ে এসেছে। এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা ছিল। আইপিওকালীন সময়ই বোঝা গিয়েছিল কোম্পানিটি ২-৪ বছর পর লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

২০২১ সালে শেয়ারবাজারে আসে লুব-রেফ বাংলাদেশ। ওই সময় ২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২.৫৬ টাকা মুনাফা দেখানো কোম্পানিটির বুক বিল্ডিংয়ে কাট-অফ প্রাইস হয় ৩০ টাকা। আর সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭ টাকা করে শেয়ার ইস্যু করা হয়।

এমন প্রিমিয়াম নেওয়া লুব-রেফের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (০.৭৪) টাকা। ওই অর্থবছরের ব্যবসায় ১% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যে কোম্পানিটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ব্যবসায় ২% লভ্যাংশ দিয়েছিল। এই নামমাত্র লভ্যাংশও ঠিকমতো শেয়ারহোল্ডারদের দিতে পারেনি। এ কারনে কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ না পেয়ে অনেক শেয়ারহোল্ডার বিএসইসিতে অভিযোগও করেন।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির অর্থবছরে (২০২০-২১) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ৩.৪১ টাকা। যা কমে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২.১৩ টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে আরও কমে হয় ১.৪১ টাকা।