বিনোদন ডেস্ক : নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক ছিল নায়ক শাকিব খানের। তার অভিভাবকের মতো ছিলেন রাজ্জাক। তাই নায়করাজের প্রয়াণে একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন শাকিব। আজও প্রিয় অভিভাবকের শূন্যতা তাকে বেদনা দেয়। রাজ্জাকের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এদিনে তাকে স্মরণ করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাকিব।

রাজ্জাককে স্মরণ করে ২১ আগস্ট নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্টটি করেন শাকিব খান। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‌‘আপনাকে গভীরভাবে অনুভব করি প্রতি পদে পদে। শুধুই একজন অভিনেতা নন, ...

বিনোদন ডেস্ক : নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক ছিল নায়ক শাকিব খানের। তার অভিভাবকের মতো ছিলেন রাজ্জাক। তাই নায়করাজের প্রয়াণে একেবারে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন শাকিব। আজও প্রিয় অভিভাবকের শূন্যতা তাকে বেদনা দেয়। রাজ্জাকের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এদিনে তাকে স্মরণ করে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাকিব।

রাজ্জাককে স্মরণ করে ২১ আগস্ট নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে পোস্টটি করেন শাকিব খান। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‌‘আপনাকে গভীরভাবে অনুভব করি প্রতি পদে পদে। শুধুই একজন অভিনেতা নন, আপনি সুন্দর স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি। আপনার অভিনয়, হাসি চিরকাল বেঁচে থাকবে আমাদের স্মৃতিতে, ভালোবাসায়। আপনার প্রতি রইলো গভীর শ্রদ্ধা, চিরশান্তিতে থাকুন।’

২০১৭ সালের আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ৭৫ বছর বয়সে মারা যান কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক রাজ্জাক। ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক। কলকাতার থিয়েটারে অভিনয় করার মাধ্যমে অভিনয় জীবনের শুরু।

সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছা নিয়ে রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে এসে শিলালিপি ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। তবে ১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে পড়ে রাজ্জাক তার পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন।

‘৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত হাসির সিনেমা ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রাজ্জাক ঢাকায় তার অভিনয় জীবনের সূচনা করেন। এরপর ‘কার বউ’, ‘ডাক বাবু’-তেও অভিনয় করেন। প্রতিভাবান পরিচালক জহির রায়হান তার লোকসিনেমা ‘বেহুলা’তে রাজ্জাককে লখিন্দরের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ দিয়ে নায়ক হিসেবে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসেন।

‘বেহুলা’ সিনেমাতে সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাজ্জাককে।

৬০-এর দশকের শেষ থেকে ’৭০ ও ’৮০-এর দশকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠেন রাজ্জাক, অভিনয় করেন ৩ শ’-এরও বেশি চলচ্চিত্রে। পরিচালনা করেন ১৬টি চলচ্চিত্র। রাজ্জাক অভিনীত জননন্দিত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ, যে আগুনে পুড়ি, জীবন থেকে নেয়া, কী যে করি, অবুঝ মন, রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, অনন্ত প্রেম, বাদী থেকে বেগম ইত্যাদি। অনেক সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন তিনি।

বর্ণাঢ্য অভিনয় ক্যারিয়ারে রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী ও রাজ্জাক-শাবানা ও রাজ্জাক-ববিতা জুটির অনেক সিনেমা দর্শক হৃদয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি পেয়েছেন একাধিক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

ব্যক্তিগত জীবনে রাজলক্ষীর সঙ্গে সুখের দাম্পত্যে রাজ্জাক ছিলেন তিন পুত্র ও দুই কন্যার জনক। তার দুই পুত্র বাপ্পারাজ ও সম্রাটও বাবার মতোই নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। শেষ জীবনে নানা অসুখে আক্রান্ত ছিলেন নায়করাজ। মৃত্যুর পর তাকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।