অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস প্রদত্ত ঋণ থেকে সুদজনিত আয়। আর সবচেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে গ্রাহকের থেকে আমানতের বিপরীতে সুদ ব্যয়। এক্ষেত্রে সুদজনিত ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হওয়া স্বাভাবিক হলেও মিডল্যান্ড ব্যাংক ব্যতিক্রম। এ ব্যাংকটির চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সদুজনিত আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়েছে।

দেখা গেছে, ব্যাংকটির চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সুদজনিত আয় হয়েছে ৩৪৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তবে গ্রাহকদের আমানতের বিপরীতে সুদজনিত ব্যয় ...

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ব্যাংকের আয়ের প্রধান উৎস প্রদত্ত ঋণ থেকে সুদজনিত আয়। আর সবচেয়ে ব্যয় বেশি হয়ে গ্রাহকের থেকে আমানতের বিপরীতে সুদ ব্যয়। এক্ষেত্রে সুদজনিত ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হওয়া স্বাভাবিক হলেও মিডল্যান্ড ব্যাংক ব্যতিক্রম। এ ব্যাংকটির চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) সদুজনিত আয়ের থেকে ব্যয় বেশি হয়েছে।

দেখা গেছে, ব্যাংকটির চলতি বছরের প্রথমার্ধে প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সুদজনিত আয় হয়েছে ৩৪৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। তবে গ্রাহকদের আমানতের বিপরীতে সুদজনিত ব্যয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে ব্যয় বেশি ৪০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যাতে আয়ের প্রধান উৎসেই পিছিয়ে রয়েছে ব্যাংকটি।

এতে করে ব্যাংকটির চলতি বছরের প্রথমার্ধের ব্যবসায় বড় ধস নেমেছে। আগের বছরের প্রথমার্ধের ২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকার নিট মুনাফা এ বছরের প্রথমার্ধে নেমে এসেছে ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকায়। অন্যভাবে শেয়ারপ্রতি ০.৪৩ টাকার মুনাফা নেমে এসেছে ০.১৮ টাকায়। এ হিসাবে ব্যবসায় পতন হয়েছে ৫৮%।

এই পতনের পেছনে সুদজনিত আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া ছাড়াও সঞ্চিতি বৃদ্ধি পাওয়া অন্যতম কারন হিসেবে রয়েছে। ব্যাংকটির আগের বছরের প্রথমার্ধে সঞ্চিতি ব্যয় ৫৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা হলেও এ বছরের প্রথমার্ধে হয়েছে ১১১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সঞ্চিতি ব্যয় বেড়েছে ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা বা ৯৮%।

তবে ব্যাংকটি মুনাফাতো পরের কথা লোকসানে নেমে যেত, যদি বিনিয়োগ থেকে আয় বৃদ্ধি না পেত। এ ব্যাংকটির আগের বছরের প্রথমার্ধে বিনিয়োগ থেকে আয় হয়েছিল ১০৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। যার পরিমাণ এ বছরের প্রথমার্ধে হয়েছে ২০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিনিয়োগ থেকে আয় বেড়েছে ১০৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বা ৯৮%।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে ব্যবসায় পতনের কারন হিসেবে জানিয়েছে, আগের বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে কম আয় অর্জন করা।

ব্যাংকটির ৩৪৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা সুদজনিত আয় করতে ২০২৫ সালের ৩০ জুন ঋণ বিতরনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। আর ৩৮৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার সুদজনিত ব্যয় হওয়া কোম্পানিটিতে ৭ হাজার ৮৯৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকার আমানত রয়েছে। এরমধ্যে ফিক্সড ডিপোজিট ৪ হাজার ৬৯০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।

মিডল্যান্ড ব্যাংকে ব্যবস্থাপনার প্রধান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পেছনে মাসে ব্যয় ১৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা। ব্যাংকটিতে বর্তমানে এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহসান-উজ জামান। যার পেছনে ব্যাংকটির চলতি বছরের ৬ মাসে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া মিডল্যান্ড ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৬৫৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে ২৩.৪০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের হাতে। কোম্পানিটির শনিবার (৩০ আগস্ট) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ১৯.১০ টাকায়।