অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ১৯৮০ সাল থেকে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর অনুভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালে শুধু তাপজনিত অসুস্থতার কারণে ২৫০ মিলিয়ন কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে, যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। যা দেশের মোট জিডিপির ০.৪ শতাংশ। প্রতি ডলার সমান ১২১ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২১ হাজার ...

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : ১৯৮০ সাল থেকে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর অনুভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালে শুধু তাপজনিত অসুস্থতার কারণে ২৫০ মিলিয়ন কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে, যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। যা দেশের মোট জিডিপির ০.৪ শতাংশ। প্রতি ডলার সমান ১২১ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘অ্যান আনসাস্টেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করে বিশ্বব্যাংক।

বিশ্বব্যাংক গবেষণা প্রতিবেদনে বলছে, গরমের কারণে ডায়রিয়া, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তিসহ নানা শারীরিক সমস্যা বাড়ছে। তীব্র গরমে ডিপ্রেশন ও দুশ্চিন্তার মতো মানসিক সমস্যাও বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে বাংলাদেশে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে এবং উৎপাদনশীলতা কমে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের মানুষ প্রচণ্ড তাপমাত্রার ঝুঁকিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ঢাকার তাপমাত্রার প্রভাব জাতীয় গড়ের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি। মহিলারা গরমজনিত অসুস্থতায় বেশি ভোগেন, ফলে হিট স্ট্রোকসহ ক্লান্তি বোধ করেন। গরমকালে ডায়রিয়া ও কাশি দ্বিগুণ হয় শীতের তুলনায়।

বিশ্বব্যাংক কিছু সুপারিশ তুলে ধরে বলছে, তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় সমন্বিত জাতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা জরুরি। স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে গরমজনিত রোগ মোকাবিলা করা। শহরে সবুজ এলাকা তৈরি, সঠিক আবহাওয়া ও স্বাস্থ্যতথ্য সংগ্রহ। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অর্থায়নের মাধ্যমে প্রতিরোধ ও অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ জোরদার করা।

বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক নীতি ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এই সংকট মোকাবিলা করতে পারবে এবং একটি টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, বাড়তি তাপমাত্রার কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হতাশা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে উদ্বেগ ৫০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। শীতকালের তুলনায় গ্রীষ্মকালে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার কারণে উৎপাদনশীলতা কমে যায়।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার ইফফাত মাহমুদ বলেন, আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাড়তি তাপের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যগত অবস্থার অবনতি এবং উৎপাদনশীলতার উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হচ্ছে। অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও মানবসম্পদ ও উৎপাদনশীলতা হারানোর প্রকৃত ঝুঁকির মুখোমুখি।