অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা বা কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার (কিউআইও) পূর্ব শেয়ারহোল্ডাররা বড় ছাড় দিতে রাজি। তারপরেও শেয়ারবাজারে আসতে হবে। যেমনটি করে থাকে দূর্বল কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। যারা শেয়ারবাজারে আসেই মূলত প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে। ক্রাফটসম্যানের ৫ কোটি টাকা উত্তোলনে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের বা আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লোকসান বা মালিকানা কমে আসবে।

বর্তমানে কোম্পানিটিতে কিউআইও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের ১৩.২০ টাকা হারে ৩০ ...

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করতে উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা বা কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার (কিউআইও) পূর্ব শেয়ারহোল্ডাররা বড় ছাড় দিতে রাজি। তারপরেও শেয়ারবাজারে আসতে হবে। যেমনটি করে থাকে দূর্বল কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা। যারা শেয়ারবাজারে আসেই মূলত প্লেসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে। ক্রাফটসম্যানের ৫ কোটি টাকা উত্তোলনে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের বা আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লোকসান বা মালিকানা কমে আসবে।

বর্তমানে কোম্পানিটিতে কিউআইও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের ১৩.২০ টাকা হারে ৩০ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সম্পদের মালিকানা রয়েছে। তবে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসতে চাওয়ায়, কোম্পানিটির কিউআইও পরবর্তীতে শেয়ারপ্রতি সম্পদ ০.৭৩ টাকা করে কমে ১২.৪৭ টাকায় নেমে আসবে। এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা/পরিচালকদের বা কিউআইও পূর্ববর্তীদের শেয়ারপ্রতি ০.৭৩ টাকা হারে মোট ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লোকসান হবে।

এই বিশাল ত্যাগ মূলত তারাই করতে পারে, যারা ইতিমধ্যে ভূয়া সম্পত্তি দেখিয়ে রেখেছে। অন্যথায় দীর্ঘদিন ব্যবসা করে সম্পদ বড় করা কোম্পানি, তার ভাগ অন্যদের দিতে পারে না।

হিসাববিদদের মতে, বিএএস-৩৬ অনুযায়ি যেকোনো প্রতিষ্ঠানের ইমপেয়ারম্যান্ট লস হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানিগুলো তা না করে সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখায়। এক্ষেত্রে ক্রাফটসম্যানও এর ব্যতিক্রম না।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) করপোরেট গভর্নেন্স ফাইন্যান্সিয়াল বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেকোন কোম্পানির ক্ষেত্রে ইমপেয়ারমেন্ট লস হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কোম্পানিগুলো গতানুগতিকভাবে তা না করে মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন......

অতিরঞ্জিত সম্পদ ও ইপিএস দেখিয়ে টাকা তুলতে যাচ্ছে ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যার

ক্রাফটসম্যান ফুটওয়্যারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের ব্যবসার উপর ভিত্তি করে কিউআইওতে আবেদন করে ইস্যু ম্যানেজার গ্রীন ডেল্টা ক্যাপিটাল। ওইসময় কোম্পানিটির জন্য ৭ কোটি টাকা উত্তোলনের আবেদন করে। যা পরে পুরো অর্থবছরের আর্থিক হিসাব দাখিলে কমিয়ে ৫ কোটিতে আনা হয়েছে। টাকা কমলেও কিউআইওতে অর্থ উত্তোলনের উদ্দেশ্য একই রয়েছে। শুধু পরিমাণ কমেছে ২ কোটি টাকার। কিন্তু ১ম প্রান্তিক শেষে এবং পুরো অর্থবছর শেষে কিউআইও অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে জিনিসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে উল্লেখ।

যেমন ‘অটোমেটিক ডাবল সাইড আইলেটিং অ্যান্ড পাঞ্চিং মেশিন’ ১ম প্রান্তিকের সময় এবং পুরো অর্থবছর শেষে চায়না থেকে দুই সেট কিনতে ৬০১৮০০ টাকাই লাগবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে ডলার রেট বেড়েছে। যাতে করে ১ম প্রান্তিকের সঙ্গে পুরো অর্থবছরের শেষের দাম একই হওয়ার কথা না। একইভাবে ‘অটোমেটিক হুক আইলেটিং মেশিন কমপ্লিট’ ও ‘স্ক্রু টাইপ এয়ার কম্প্রেসার’ ক্রয় এবং অবকাঠামো নির্মাণ ব্যয় আগের মতোই হবে বলে উল্লেখ করেছে।

আরও পড়ুন.....

বিভিন্ন অনিয়মে বাতিল হওয়া ক্রাফটসম্যান প্লেসমেন্ট ইস্যু করে পেয়ে গেল কিউআইও

ব্যবসা সম্প্রসারণ, ঋণ পরিশোধ ও চলতি মূলধনের জন্য এ কোম্পানিটিকে শেয়ারবাজারে আনা হচ্ছে। কিন্তু কিউআইও প্রক্রিয়া চলমান থাকতেই কোম্পানিটির জন্য অর্থ উত্তোলন করা হলেও সেগুলো করা হয়নি। বরং ঋণ বাড়ানো হয়েছে। অথচ সুদজনিত ব্যয় কমাতে একটি কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনা হয়।

ক্রাফটসম্যান শেয়ারবাজার থেকে ৫ কোটি টাকা উত্তোলন করতে চায়। অথচ কোম্পানিটির কাছে ৯ কোটি টাকার বেশি নগদ রয়েছে বলে আর্থিক হিসাবে তথ্য প্রকাশ করেছে।