টেকনো ড্রাগসে প্লেসমেন্ট নেই

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে প্লেসমেন্ট শেয়ারকে অনেকেই নেতিবাচকভাবে দেখে থাকেন। কারন কিছু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজারে আসার আগে নিজেদের মধ্যে বেনামে শেয়ার ইস্যু করে পরবর্তীতে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যেমনটি হওয়ার সুযোগ নেই টেকনো ড্রাগসে। ওষুধ রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে অন্যতম টেকনো ড্রাগস কর্তৃপক্ষ কোনো প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করেনি। যে কোম্পানিটির আইপিও পূর্ব শেয়ারহোল্ডার মাত্র ১৮ জন।
দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে আসার আগে সর্বশেষ ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল নগদে শেয়ার ইস্যু ...
অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে প্লেসমেন্ট শেয়ারকে অনেকেই নেতিবাচকভাবে দেখে থাকেন। কারন কিছু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শেয়ারবাজারে আসার আগে নিজেদের মধ্যে বেনামে শেয়ার ইস্যু করে পরবর্তীতে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যেমনটি হওয়ার সুযোগ নেই টেকনো ড্রাগসে। ওষুধ রপ্তানিতে দেশের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে অন্যতম টেকনো ড্রাগস কর্তৃপক্ষ কোনো প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু করেনি। যে কোম্পানিটির আইপিও পূর্ব শেয়ারহোল্ডার মাত্র ১৮ জন।
দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে আসার আগে সর্বশেষ ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল নগদে শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল। সেটা উদ্যোক্তা/পরিচালকদের নিজেদের নামেই।
প্রসপেক্টাস অনুযায়ি, টেকনো ড্রাগসের আইপিও পূর্ব মোট পরিশোধিত মূলধন ছিল ৯৪ কোটি ১৫ লাখ ৭৪ হাজার টাকা এবং এর শেয়ারহোল্ডার ছিল ১৮ জন। এরমধ্যে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদেরই মালিকানা ৬৩.১৪ শতাংশ। এছাড়া পর্ষদের বাকি ৪ জনের কাছে ছিল ২৪.৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ পরিচালকদের কাছেই মালিকানা ৮৭.৯০ শতাংশ।
বাকি ১৩ জনের কাছে ছিল ১২.১০ শতাংশ। যেগুলো শাহ জালাল উদ্দিন আহমেদের পরিবারের অন্যান্যদের ও নিজেদের পরিচালিত অন্যসব কোম্পানির কাছে রয়েছে।
বেস্ট হোল্ডিংসে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ৬৫ টাকা করে ৩২৯ কোটি টাকার বিনিয়োগ
বিশেষায়িত এ কোম্পানিটির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) টাকার অঙ্কে রেকর্ড পরিমাণ আবেদন জমা পড়ে। ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে কোম্পানিটির আইপিওতে ২ হাজার ৪৮৭ কোটি ১৮ হাজার ১০৪ টাকার আবেদন জমা পড়ে। যা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা তোলার অনুমোদন পায় ওষুধ খাতের এই প্রতিষ্ঠান। যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করে প্রতিটি শেয়ারের কাট অফ প্রাইস নির্ধারণ করে ৩৪ টাকা।
এর থেকে ৩০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৪ টাকা করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিও দাম নির্ধারিত হয়। গত ৯ থেকে ১৩ জুন আইপিওতে আবেদন করেন।
জানা গেছে, আইপিওর মাধ্যমে কোম্পানিটির ১০০ কোটি টাকা মূলধন উত্তোলন করে। কোম্পানিটির ১০০ কোটি টাকার বিপরীতে ১০২ কোটি ৬৫ লাখ ৮৬ হাজার ১৮০ শেয়ারের মাধ্যমে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২৬টি আবেদনে ২ হাজার ৪৮৭ কোটি ১৮ হাজার ১০৪ টাকার আবেদন জমা পড়ে।
আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থে কোম্পানিটি নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়, বিএমআরই (নরসিংদী কারখানা), ভবন নির্মাণ (গাজীপুর কারখানা), আংশিক ঋণ পরিশোধ ও ইস্যু ব্যবস্থাপনা খরচ খাতে ব্যয় করবে।
কোম্পানিটির ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়নসহ শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২৭ টাকা ৭৪ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া যা ২২ টাকা ৫৭ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৮ পয়সা, বিগত পাঁচ বছরের ভারিত গড় হারে যা ৩ টাকা ২৫ পয়সা।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ইম্পেরিয়াল ক্যাপিটাল লিমিটেড ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড।
টেকনো ড্রাগস ২০১৪ সালে ওষুধ রপ্তানিতে চতুর্থ স্থান অর্জন করে। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ সালে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। ২০০৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয় এবং ২০১৯ সালে প্রাইভেট কোম্পানি থেকে পাবলিক কোম্পানিতে রুপান্তরিত হয়।
টেকনো ড্রাগস সাধারনত বিশেষায়িত পণ্য নিয়ে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির অনকোলজির ক্যামোথেরাপি, অ্যানেস্থেসিয়া বা চেতনানাশক, জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল, ইনজেকশন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ইমপ্ল্যান্ট স্টিক (৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রন) রয়েছে। এছাড়াও ভেটেনারি ও সাধারন হিউম্যান মেডিসিনও রয়েছে।
ইমপ্ল্যান্ট স্টিক যা বাংলাদেশে একমাত্র টেকনো ড্রাগস উৎপাদন করে। এটি ৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রযোজ্য। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রধান ওষধ সমূহগুলো হলো- জন্ম নিয়ন্ত্রন মেডিসিন- সুখী থার্ড জেনারেশন ওরাল পিল, প্রোভেরা ইনজেকশন, ইমপ্ল্যান্ট স্টিক (৫ বছরের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রন), এন্টিক্যান্সার মেডিসিন- হেরিটিন, জোলোমাইড, ইপোসাইড, চেতনানাশক মেডিসিন- লিডোসিন প্লাস ইনজেকশন, ভেনকুরোন ১০টিভি ইনজেকশন, সাধারন হিউম্যান মেডিসিন- মোটিলেক্স সাসপেনশন, ওমিসেক, রোমিলেক, সেফিক্সোন ইনজেকশন, ভেটেনারি মেডিসিন- ভারমিক ইনজেকশন, ডেক্সাভেট ইনজেকশন, রুমেন প্লাস পাউডার, ভিটা জিংক।