অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে আইন পরিপালন করা হয়নি বলে বিতর্ক উঠেছে। গত রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) ডিএসইতে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়োগ দেওয়া ৭ জন স্বাধীন পরিচালকের মধ্যে ৩ জনের নিয়োগ নিয়ে এই বিতর্ক উঠছে। এই পরিস্থিতিতে জটিলতা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

গত ৪ সেপ্টেম্বর বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ...

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে আইন পরিপালন করা হয়নি বলে বিতর্ক উঠেছে। গত রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) ডিএসইতে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়োগ দেওয়া ৭ জন স্বাধীন পরিচালকের মধ্যে ৩ জনের নিয়োগ নিয়ে এই বিতর্ক উঠছে। এই পরিস্থিতিতে জটিলতা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

গত ৪ সেপ্টেম্বর বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক মো: আনোয়ারুল ইসলাম সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ডিএসইর পক্ষ থেকে শুরুতে কে এ এম মাজেদুর রহমান ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে স্বাধীন পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক উঠে। পরবর্তীতে ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে নিয়েও বিতর্ক উঠেছে।

এই বিতর্কের পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে- মাজেদুর রহমান ও হেলাল উদ্দিন সর্বশেষ ৩ বছরের মধ্যে ডিএসইর ট্রেকহোল্ডার প্রতিষ্ঠানে জড়িত ছিল। কিন্তু ডিএসই রেগুলেশনস ও ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কীমে বিগত ৩ বছরের মধ্যে ব্রোকারেজ হাউজে জড়িত কেউ ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন বলে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না আইনে বলা হয়েছে। সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে কর্মরত অতিরিক্ত সচিব ডক্টর নাহিদ হোসেনকে ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেওয়ায় বিতর্ক উঠেছে।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ এর নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) কর্তৃক প্রস্তাব দাখিলের প্রেক্ষিতে কমিশন স্টক এক্সচেঞ্জ এর স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে অনুমোদন প্রদান করে থাকে। তবে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক পদত্যাগ করায় বর্তমানে উক্ত এক্সচেঞ্জ এর এনআরসি কমিটি নাই। যা না থাকায়, স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচন বিষয়ে ডিএসই হতে প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের সুযোগ নাই। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক না থাকায়, এনআরসি কমিটি গঠনেরও সুযোগ নেই। সে প্রেক্ষিতে বর্তমানে স্বতন্ত্র পরিচালক না থাকায়, ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ আইন অনুযায়ী পূর্ণকার্যকর নয়।

তবে শেয়ারবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষার্থে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা আবশ্যক ও অতীব জরুরি বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিএসইসি। সে কারনে গত ১ সেপ্টেম্বর ৯১৮তম জরুরি কমিশন সভার সিদ্ধান্তক্রমে এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এর ২৪ ধারা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে কে এএম মাজেদুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুন....

এবার হেলাল উদ্দিনকে ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক

স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন পরিপালনের আহ্বান

ডিএসইতে বিএসইসির এককভাবে স্বাধীন পরিচালক চাপিয়ে দেয়া নজিরবিহীন

ডিএসইতে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে আইনের পরিপালন নিয়ে বিতর্ক

স্বাধীন পরিচালক নিয়োগে স্বাধীনতা নেই ডিএসইর

মাজেদুর রহমান পূর্বে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডার একে খান সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর পরিচালনা পর্ষদের একজন মনোনীত পরিচালক হিসাবে ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত নিযুক্ত ছিলেন। বর্তমানে মাজেদুর রহমান ডিএসই বোর্ড অ্যান্ড এডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশনস ২০১৩ এর রেগুলেশনস 5(5)(f) ও 5(5)(g) এ উল্লিখিত কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনভাবে জড়িত নন।

তবে তিনি একে খান সিকিউরিটিজের পরিচালনা পর্ষদের একজন মনোনীত পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন বিধায়, তার নিয়োগের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

এমতাবস্থায় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ গঠন ও শেয়ারবাজার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এর ২৬ ধারা মোতাবেক উক্ত জটিলতা নিরসনে জরুরিভিত্তিতে সরকারের নির্দেশনা প্রয়োজন।