ঢাকা, শনিবার, ৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

কমিশনের উপর আস্থার সংকটে কোন ভালো কোম্পানি আইপিওতে আগ্রহ দেখায়নি

২০২৫ মার্চ ০৬ ১৫:৪৩:০৯
কমিশনের উপর আস্থার সংকটে কোন ভালো কোম্পানি আইপিওতে আগ্রহ দেখায়নি

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের অনেক সমস্যার মধ্যে তাদের উপর আস্থার সংকটের কারণে গত ৬ মাসে মৌলভিত্তিক কোন কোম্পানি শেয়ার বাজারে আসার আগ্রহ দেখায়নি! এতে শেয়ার বাজার নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। আরোও উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে এক জরিপে দেখা যায় মাত্র ১০ শতাংশ মতামতকারী বর্তমান কমিশনের নের্তৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।বর্তমান কমিশন কোন ইস্যু অনুমোদন না করে বাতিল করার বিষয়েই বেশি আগ্রহী। এসব অবস্থায় বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মিরাজ উস সুন্নাহ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান।

এতে বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে বলা হয়,

১.স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরে স্বৈরাচার সরকারের সময়ে বিএসইসিতে নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়ত উল ইসলাম ও ৩ জন কমিশনার এর পতন হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে কমিশনার মোহসিন চৌধুরী এখনো বহাল তবিয়তে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কারকে ব্যর্থ করার অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়োগ প্রাপ্ত কমিশনার মহসীন চৌধুরী অন্যন্য কমিশনার এবং চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর এবং শোকজসহ নানাবিধ হয়রানি করছে। মুঃ মহসিন চৌধুরী যুগ্মসচিব পদে থাকাকালীন ২০১৭ সালে স্বৈরাচারী সরকারের তৎকালীন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম, বিএসসি এর একান্ত সচিব হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট ডাকাতির কাজে সহযোগিতার পুরস্কার হিসাবে ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসাবেও নিয়োগ প্রাপ্ত হন। এবং পরবর্তীতে তার তোষামোদীর পুরস্কার স্বরূপ তাকে (স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের আমলে) সচিব পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১১ আগস্ট ২০২৪ তারিখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে। সরকার যেখানে অন্যান্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে, সেখানে হাসিনা সরকারের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত এই আমলার বিএসইসির মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বহাল রয়েছে।

২. কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণ কমিশনের সকল লেভেলের কর্মকর্তাদের সাথে চরম দূর্ব্যবহার (গার্মেন্টস কর্মী, ফোরম্যান, কুয়োরব্যাঙ, চোর ইত্যাদি বলে গালমন্দ করেন) যা অত্যন্ত দু:খজনক।

৩. ফাইলে/নথিতে না লিখে নিয়মিত মৌখিক নির্দেশনা প্রদান এবং উক্ত নির্দেশনা না মানতে চাইলে দূর্বব্যবহার এবং শোকজ দেওয়ার হুমকি প্রদান। অথচ তারা সবসময় মুখে বলেন আইনের বাইরে কোন কিছুই করবেন না।

৪. কমিশনের উপর আস্থার সংকটের কারণে গত ৬ মাসে মৌলভিত্তিক কোন কোম্পানি শেয়ার বাজারে আসার আগ্রহ দেখায়নি! এতে শেয়ার বাজার নিস্তেজ হয়ে পড়ছে। আরোও উল্লেখ্য যে, সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকা “প্রথম আলোর” এক জরিপে দেখা যায় মাত্র ১০ শতাংশ মতামতকারী বর্তমান কমিশনের নের্তৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।বর্তমান কমিশন কোন ইস্যু অনুমোদন না করে বাতিল করার বিষয়েই বেশি আগ্রহী।

৫. কমিশনের কর্মচারি চাকুরি বিধিমালায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা স্বত্বেও কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রদানে অহেতুক কালক্ষেপণ ও পদোন্নতিসহ বিধিমোতাবেক অন্যন্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানে চরম অনীহা ও অবহেলা করছেন। কমিশনের যোগ্য কর্মকর্তাদের চাকুরীচ্যুত করে ও শূন্যপদে পদোন্নতি না দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষনে নিয়োগের ষড়যন্ত্র করছেন। কমিশনে প্রচণ্ড জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও কমিশনের প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম পাশের ব্যবস্থা না করে তারা প্রেষণে উপরের পদগুলোতে নিয়োগের জন্য ষড়যন্ত্র করছেন;

৬.বিধিতে না থাকা স্বত্বেও নিজেদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ যার মধ্যে বিধিতে আপ্যায়ন বাবদ প্রতি মাসে চেয়ারম্যান ৩০০০ টাকা এবং প্রত্যেক কমিশনারের জন্য ২৫০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে চেয়ারম্যান প্রতিমাসে ২৫০০০ টাকা এবং কমিশনারগণ ১৫০০০ টাকা করে উত্তোলন করছেন।

৭. বিধির বিভিন্ন শর্ত ও যোগ্যতা শিথিল করে বিভিন্ন তালিকাভূক্ত কোম্পানিতে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ঢাকা স্টক এক্সেচঞ্জের পরিচালক পর্ষদে আইন অনুযায়ী Fit and Proper Test না করেই সংশ্লিষ্ট বিভাগ হতে নিয়ম অনুযায়ী পদ্ধতি ব্যতিরেকে, যথা পদ্ধতি ব্যতিরেকে শর্ত পরিপালন না করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নিজেদের পছন্তসই স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যা ইতিমধ্যে পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এবং এজন্য দুইবার বোর্ড পরিবর্তন করতে হয়েছে।

৮. আইন বহির্ভুতভাবে বিনিয়োগকারীদেরকে Customer Consolidated Account (সিসিএ) একাউন্টে অর্জিত সুদ প্রদান থেকে বিনিয়োগকারীগণকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা বিনিয়োগকারীগণের স্বার্থের পরিপন্থী।

৯.বিতর্কিত লোক যাদের বিরুদ্ধে কমিশন পূর্বে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্হা গ্রহণ করেছে এবং এখনো Enforcement প্রক্রিয়া চলমান তাদেরকে দিয়ে পুঁজিবাজার তদন্তের নামে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টার্গেট করে কমিশনের কর্মকর্তা -কর্মচারীদের বে-আইনী ও অনৈতিকভাবে হয়রারি করা হচ্ছে। উল্লেখ্য বিধিতে/সরকারি নিয়মানুযায়ী কমিটির সদস্যদের প্রতি সভার সম্মানি-ভাতা বাবদ ৩০০০/--৫০০০/- টাকা প্রদানের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে প্রতিমাসে মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন ব্যতিরেকে বহিঃসদস্য প্রতি ২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হচ্ছে যা সম্পূর্ণরুপে পুঁজিবাজার স্বার্থ বিরোধী এবং বে-আইনী।

১০. কমিশনের অফিস আদেশ নং- বিএসইসি/প্রশাসন/ব্যঃ নথি ২১:৪৩/২০০০-২৭১ হতে দেখা যায় যে, কমিশনের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোঃ সাইফুর রহমানকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মচারী চাকরি বিধিমাল্য ২০২১ এর বিধি ৬৩ এবং সরকারী চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৪৫ এর ক্ষমতা বলে ০৪ মার্চ ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ৯৪৫ তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক চাকরি হতে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয়।

কিন্তু উল্লেখিত বিধি ও উল্লেখিত আইনের বিধান অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারে অনুমোদন গ্রহণ করা আবশ্যক হলেও মোঃ সাইফুর রহমানকে অবসরে পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ ও কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এ 'সরকার" শব্দের কোন সংজ্ঞা প্রদান করা হয় নি। সরকারী চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ২(১৪) তে সরকারের যে সংঙ্গা প্রদান করা হয়েছেছে সে অনুযায়ী 'সরকার' এর সংজ্ঞা নিম্নরুপ:

"সরকার" অর্থ এই আইনে বর্ণিত কোন কার্য সম্পাদনের জন্য Rules of Business, 1996 এর Schedule-I (Allocation of Business Among the Different Ministries and Divisions) অনুসারে ক্ষমতা বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ;"

উপযুক্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী কমিশন কোন ভাবেই সরকারের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। এবং কমিশন সরকারের আসনে আসীন হয়ে সরকারের উপরে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারে না।

আবার, জনাব মোঃ সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত ৯৪৫ তম কমিশন সভায় নেওয়া হয়েছে সে সিদ্ধান্তও অবৈধ। এক্ষেত্রে কোন কার্যপত্র ব্যতীত ও উক্ত সভার নোটিশে অবসর প্রদানের বিষয়টি আলোচ্য সূচী ভুক্ত না করেই সভায় আলোচনাপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে করা হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (সভা সংক্রান্ত) বিধিমালা, ১৯৯৪ এর বিধি ৮ এর বিধান নিম্নরুপঃ

”প্রতিটি সভার আলোচ্যসূচী চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্ধারিত হইবে এবং উহা সভার নোটিশে উল্লেখ করিতে হইবে।" সুতরাং, এটা স্পষ্ট যে, সরকারের অনুমতি ব্যতীত এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ অর্থাৎ প্রসাশন ও অর্থ বিভাগের কার্যপত্র ব্যতীত সভার নোটিশে আলোচ্যসূচীভুক্ত না করেই জনাব মোঃ সাইফুর রহমান কে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাশেদ মাকসুদ কমিশন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০২১ এর বিধি ৬৩, সরকারী চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৪৫ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিপ ও এক্সচেক কমিশন (সভা সংক্রান্ত) বিধিমালা, ১৯৯৪ এর বিধি ৮ এর লংঘন করা হয়েছে।

১১। তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করার অঙ্গীকার করে চেয়ারম্যান তা প্রকাশ না করে, এবং কমিশনের চাকুরি বিধিমালার সংশ্লিষ্ট বিধি লংঘন করে কমিশনে কোনো প্রকার সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিধি বহিভূতভাবে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তথা গুরুদণ্ড প্রদানের নোটিশ জারি করেছেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও এ সুপারিশকে আমলে না নিয়ে চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতাবলে উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে কমিশনের ১৫ জনের বিরুদ্ধে যে শোকজ ইস্যু করা হয়েছে সে বিষয়ে কমিশন সভা থেকে কোনোরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় নি;

১২.কমিশনের কমকর্তাগণকে কোনোরূপ Delegation of Power না দিয়ে পূর্বতন কমিশন কর্তৃক গৃহিত আইন বহির্ভূত সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের দায়ভার কমিশনের কর্মকর্তাদের উপর দায় চাপানোর অপপ্রয়াস করা হচ্ছে এবং কর্মকর্তাদেরকে বিভিন্ন উপায়ে ভীতি সঞ্চার করে কর্মকর্তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

১৩.বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্মচারী বিধিমালার বিধি ৪৯ অনুযায়ী কোন দন্ডের ভিত্তি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। বিধি ৫৩ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ গুরুদন্ড আরোপের বিষয়ে অভিমত পোষন করলেই শুধুমাত্র অভিযোগনামা প্রনয়ণ করা যাবে।উক্ত বিধিমালায় কর্তৃপক্ষ অর্থে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কিংবা কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবার জন্য তদকর্তৃক মনোনীত কোন কর্মচারী। আমাদের জানা মতে, এতদসংক্রান্ত ক্ষমতা কোন কর্মচারীকে অর্পণ করা হয় নাই। সুতরাং কর্তৃপক্ষ বলতে কমিশনকেই বুঝাবে।তদন্তের ভিত্তিতে প্রনীত কারণ দর্শানোর নোটিশে দন্ডের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা বা অভিযোগনামা প্রণয়নের বিষয়ে বিধি মোতাবেক যথাযথভাবে কমিশনের অনুমোদন নেয়া হয়নি কাজেই অভিযোগনামা প্রণয়ন বিধিসম্মতভাবে হয়নি ।

১৪.Securities and Exchange Ordinance, 1969 এর section 21 এর অধীন তদন্তের ভিত্তিতে কোন ইস্যুয়ার কোম্পানী দোষী সাব্যস্ত হলে section 22 অনুযায়ী কমিশনকে তার বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। একইভাবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক এর অধীন অনুসন্ধান বা তদন্তের ভিত্তিতে কোন বাজার মধ্যস্থতাকারী দোষী সাব্যস্ত হলে ধারা ১৮ অনুযায়ী জরিমানা আরোপ বা ধারা ১৯ অনুযায়ী আদালতে মামলা দায়ের করার ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে। কিন্তু এই আইন দু‘টির অধীনে কমিশনের কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন কিংবা দোষী সাব্যস্ত করার জন্য চাকরী বিধিমালার অধীন তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা কমিশনের ২টি মূল আইনের সুস্পষ্ট লংঘন।

১৫. সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটিতে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের মধ্য থেকে ০২ (দুই) জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে যা Conflict of Interest। উল্লেখ্য, এইমস অব বাংলাদেশ-এর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কাযক্রম চলমান রয়েছে। এইমস অব বাংলাদেশ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য জনাব ইউয়ার সাইদ;

১৬. চেয়ারম্যান মহোদয়ের নেতৃত্বের গুণাবলী নেই। তিনি প্রায়শই কমিশনের সমন্বয় সভায় বলেন যে, উনি উনার অফিস সহায়ক থেকে ফাইলের ব্রিফ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যা তার যোগ্যতাহীনতার পরিচয় বহন করে। তিনি ছাড়াও বাকি ০৩ (তিন) জন কমিশনারের কারোরই পুঁজিবাজার বিষয়ে কোনোরূপ কোনো অভিজ্ঞতা নেই;

১৭.কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণ কর্তৃক পুঁজিবাজারে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দ্বায়িত্ব গ্রহনের পরপরই কোন ধরনের পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই বহু সংখ্যক কোম্পানিকে Z ক্যাটাগরি রুপান্তরের মাধ্যমে লক্ষাধিক বিনিয়োগকারীদেরকে পথে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজেদের মত স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের মাধ্যমে ন্যাশনাল টি কর্পোরেশনের সম্পত্তি জবর দখল করার অভিপ্রায়ে যোগ্যতা না থাকা স্বত্তেও পরিচালনা পর্ষদে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের দাবী স্পষ্ট- আমরা কারো ক্রীড়নক না হয়ে, আইন কানুন মেনে দেশের মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য ও সর্বপরি পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ব্যাংক পেয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব, আর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পেল একদল অনভিজ্ঞ নেতৃত্ব। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যে জানেই যে বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ অন্যান্য কমিশনারগণের পুঁজিবাজারে নিয়ে ভালো ধারণা নেই, অভিজ্ঞতা নেই, এমনকি পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের কোন সদিচ্ছা নেই। এভাবে কাজ করা যায় না। তাদের অদক্ষতায় একদিকে যেমন পুঁজিবাজারে দুর্দিন যাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের সীমাহীন দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারী, স্বৈরাচারী ও আইন বহির্ভূত মনোভাব ও কাজে কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ হতাশ।

এমতাবস্থায় পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণসহ কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীগণের সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বার্থে ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের উপর হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও অন্যান্য কমিশনারগণের পদত্যাগ দাবী করছে। অন্যথায়,আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ কর্মবিরতি পালন করবে।

খুনি হাসিনা কর্তৃক পুজিবাজারকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে পূর্বাতন প্রনীত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ২০২২ এর খসড়া তড়িঘড়ি করে সংস্কার কার্যক্রমের নাম দিয়ে পাশ করানোর অপচেষ্টা

চেয়ারম্যান ও কমিশন কর্তৃক কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে স্বৈরাচারী ও দাসসুলভ এবং অনৈতিক আচরণের মাধ্যমে কমিশনের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করা হচ্ছ।

উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষথেকে প্রস্তাবনা:

১. বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।

২.কমিশন কর্তৃক সেনাবাহিনীকে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ডেকে কমিশনের-কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।

৩. মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ, যোগ্য চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ প্রদান।

৪. সংস্কারের অংশ হিসেবে কমিশনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং দ্রুত বাস্তবায়ন।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে