ঢাকা, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

বিএসইসিতে আরও যোগ্যতার অভাব তৈরী

বিক্ষোভ করেছে সবাই : তবে ব্যক্তিগত আক্রোশে ২১ জনকে সাসপেন্ড

২০২৫ এপ্রিল ৩০ ১৯:০৮:৪৭
বিক্ষোভ করেছে সবাই : তবে ব্যক্তিগত আক্রোশে ২১ জনকে সাসপেন্ড

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে গত ৫ মার্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নজিরবিহীন ক্রোন্দলের ঘটনা ঘটে। যেখানে বিএসইসির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একজোট হয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ‍বিক্ষোভ করেছেন এবং তাদের পদত্যাগ চেয়েছেন। তবে এ কারনে রাশেদ মাকসুদের অযোগ্য কমিশন তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশে বেছে বেছে বিএসইসির ২১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। যাদের বড় অংশ বিএসইসির দক্ষ জনবল।

রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনকে শেয়ারবাজারের সব খাতের মানুষ অযোগ্য হিসেবে জানে। যাদের শেয়ারবাজার পরিচালনার মতো দক্ষতা নেই। এ নিয়ে নিয়মিত গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। এই অবস্থায় বিএসইসিতে যে কয়জন দক্ষ লোকজন আছে, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশকে বরখাস্ত করেছে মাকসুদ কমিশন। এর মাধ্যমে বিএসইসি আরও পঙ্গুত্বের দিকে নেমে গেল।

এসব বিষয়ে বিএসইসির এক কর্মকর্তা অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, চেয়ারম্যান-কমিশনারদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেছে। ওইদিন বিএসইসিতে উপস্থিত সবাই তাদের বিরুদ্ধে ছিল। তবে এই অযোগ্য খেতাব অর্জনকারী কমিশন তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ২১ জনকে বরখাস্ত করেছে। যাদের বড় অংশ বিএসইসির দক্ষ জনবল। এদের বরখাস্তের মাধ্যমে বিএসইসি আরও যোগ্যতা শুন্যতায় ভুগবে। সামনে বিএসইসিতে কাজ করার মতো লোক পাওয়া যাবে না। মাকসুদ কমিশনের এতে কিছুই যায় আসে না। তারা কয়দিন পরেই বিদায় নিয়ে চলে যাবে। কিন্তু তার আগে শেয়ারবাজারের দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি করে যাচ্ছে।

বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক সাইফুর রহমানকে বিতর্কিতভাবে বাধ্যতামূলক অবসরের পাঠানো প্রতিবাদে গত ৫ মার্চ বিএসইসির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পুরো কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিএসইসির প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কমিশনের বোর্ড রুমে চেয়ারম্যান-কমিশনারদের কাছে ৪ দাবি তুলে ধরা হয়। তবে কমিশন তা মানতে অস্বীকার জানায়। এরপরে শুরু হয় চেয়ারম্যান-কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাকবিতন্ডা।

ওইদিন বিএসইসিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাকসুদ কমিশনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। এরমধ‍্যে অন‍্যতম- 'মাকসুদের দুই গালে জুতা মারো তালেতালে', 'মাকসুদ তুই কবে যাবি', 'অযোগ্য চেয়ারম্যানের পদত্যাগ পদত‍্যাগ' '১ ২ ৩ ৪ মাকসুদ তুই গদি ছাড়' ইত‍্যাদি।

ওই বিক্ষোভে বিএসইসির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নিলেও রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন অযোগ্য কমিশন (বিএসইসি) তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ২১ জনকে বরখাস্ত করেছেন।

(গত ৬ মার্চ বিএসইসির চেয়ারম্যান-কমিশনারদের বিরুদ্ধে ঐক্যজোট হয়ে সবাই সংবাদ সম্মেলন করে)

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিএসইসির নিয়মিত কমিশন সভায় বরখাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাকসুদ কমিশন। সাসপেন্ড করার তালিকায় মামলার ১৪জন কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ আরও ৭জন রয়েছেন। মামলার বাকি ২জনের মধ্যে সাইফুর রহমানকে আগেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আর মাহবুবুল আলম নিজেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

গত ৫ মার্চের সৃষ্ট ঘটনায় বিএসইসি চেয়ারম্যানের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁর গানম্যান আশিকুর রহমান শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

বিএসইসির মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, সাবেক নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপপরিচালক বনী ইয়ামিন, উপপরিচালক আল ইসলাম, উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম, উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর, সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে।

এদের মধ্যে আগেই বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান ও নিজেই চাকরি ছেড়ে দেওয়া মাহবুবুল আলম ছাড়া বাকি ১৪ জনকে গতকালকের কমিশন সভায় বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম, উপপরিচালক নানু ভূইয়া, অতি: পরিচালক মিরাজুন সুন্নাহ, সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক আমিনুল হক খান, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সমীর ঘোষকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

একইদিনে ২১ জনকে বরখাস্তের পাশাপাশি দুজনকে শো কজ নোটিস করা হয়েছে। এরা হলেন- সহকারী পরিচালক মাকসুদা মিলা ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বৃষ্টি।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে