ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ইপিএস কমেছে ৭৮% কোম্পানির

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের উচ্চ দরে ইস্যু আনা : এখন বেহাল দশা

২০২৫ মে ১৪ ০৯:৩২:৪৩
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের উচ্চ দরে ইস্যু আনা : এখন বেহাল দশা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : গত ১৫ বছরে (২০১০ সাল থেকে বর্তমান) ৯টি কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে এনেছে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস। যার মধ্যে ১টি ছাড়া সবগুলো প্রিমিয়ামে এবং উচ্চ দরে আনা হয়েছে। তবে সেগুলোর ৬৭ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর ইস্যু মূল্যের নীচে অবস্থান করছে। এছাড়া আইপিওকালীন সময়ের তুলনায় ৭৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) কমে এসেছে।

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ইস্যুকৃত ৯ কোম্পানির মধ্যে ১টি অভিহিত মূল্যে (প্রিমিয়াম ছাড়া) ও ৮টি প্রিমিয়ামসহ শেয়ারবাজারে এসেছে। এর মধ্যে আরএকে সিরামিকস, রানার অটোমোবাইলস ও মীর আক্তার বুক বিল্ডিংয়ে প্রিমিয়াম নিয়েছে।

এই ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা ৯টি কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে জিবিবি পাওয়ারের। প্রতিটি ৪০ টাকা করে শেয়ার ইস্যু করা কোম্পানিটির দর এখন ৮.৩০ টাকা। এক্ষেত্রে শেয়ারের দর কমেছে ৭৯.২৫ শতাংশ। এছাড়া রানার অটোর ৬১.৪৯ শতাংশ ও মীর আক্তারের ৫৪.২৬ শতাংশ দর পতন হয়েছে।

আরও পড়ুন....

মাকসুদের সহযোগিতায় তারিকুজ্জামানকে বিতাড়িত করা নাহিদ এখন দুদকের জালে

সর্বোচ্চ আইপিও আনা আইসিবি ক্যাপিটালের ৫৯ শতাংশ ইস্যু মূল্যের নীচে

নিম্নে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ইস্যুকৃত কোম্পানি ৯টির শেয়ার ইস্যু দর ও বর্তমান দরের তথ্য তুলে ধরা হল :

এদিকে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ইস্যুকৃত ৯ কোম্পানির মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পূর্বের তুলনায় ৭টি বা ৭৮ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) কমে এসেছে। এরমধ্যে ৩টি কোম্পানি লোকসানে নেমেছে।

তালিকাভুক্তির পরে সবচেয়ে বেশি ইপিএস কমেছে জিবিবি পাওয়ারের। কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত পূর্ব ২.৫৭ টাকার ইপিএস সর্বশেষ অর্থবছরে ঋণাত্মক (০.৩৫) টাকায় নেমে এসেছে। এক্ষেত্রে ইপিএসে পতন হয়েছে ১১৪ শতাংশ। এছাড়া লোকসান করা রানার অটোর ১১১ শতাংশ ও আরএকে সিরামিকের ১০৫ শতাংশ পতন হয়েছে।

নিম্নে কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে আসার সময়ের ও সর্বশেষ অর্থবছরের প্রকাশিত ইপিএস তুলে ধরা হল-

এ বিষয়ে আইডিলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টস বাজারে যেসব ইস্যু এনেছিল তার বেশির ভাগই অত্যন্ত ভালো ব্যবসা করছে বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও। সবগুলো কোম্পানির ব্যবসা এখনো চলমান রয়েছে। সবগুলো কোম্পানি প্রতিবছর কম বেশি ডিভিডেন্ট দিয়ে যাচ্ছে। বেশিরভাগ কোম্পানির নেট অ্যাসেট ভ্যালু ভালো অবস্থায় আছে এবং তা বাজার দরের থেকে অনেক বেশি। তবে বিগত বেশ কিছু বছর ধরে ব্যবসায় অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে সবগুলো কোম্পানিকেই। যার প্রতিফলন তাদের মুনাফায় প্রতিফলিত হয়। প্রতিবছর কোন না কোন সেক্টর কোন একটা অর্থনৈতিক অনুঘটক দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যার কারনে প্রতিবছরই মুনাফায় প্রবৃদ্ধি দেখানো সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, রাজনৈতিক সংকট, টাকার অবমূল্যায়ন, ডলার সংকট, কাঁচামালের আমদানি সংকট, ব্যাংকের ইন্টারেস্টের বৃদ্ধি, লিকিউডিটি ক্রাইসিস, ইউটিলিটি ক্রাইসিস, সার্বিক মূল্যস্ফীতি সব মিলিয়ে কোম্পানিগুলোকে অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বা হচ্ছে। যেটার নেতিবাচক প্রতিফলন আমরা পুঁজিবাজারে দেখতে পাই। সুতরাং কোন একটা খারাপ সময়ে পুঁজিবাজারে এই কোম্পানিগুলোর মূল্য দেখে তাদের সার্বিক অবস্থা বিচার করা যথার্থ হবে বলে আমি মনে করি না। অনেক ক্ষেত্রেই অনেক ভালো কোম্পানি ভালো মুনাফা করলেও বর্তমান বাজারে অবমূল্যায়িত হয়ে আছে। আমরা যেসব কোম্পানি বাজারে এনেছি তাদের বেশিরভাগ কোম্পানির ব্যবসা ভালোভাবেই চলমান রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল হলে কোম্পানিগুলো আরো ভালো মুনাফা করবে এবং পুঁজিবাজারে তাদের শেয়ারের মূল্য বাড়বে বলে আমি মনে করি। দাম বেড়ে যাওয়া অথবা কমে যাওয়া পুঁজিবাজারে একটি বাস্তবতা। সবার লক্ষ্য থাকা উচিত কোম্পানি ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছে কিনা কিংবা তাদের মালিকরা কোম্পানি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাচ্ছে কিনা।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে