ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

­­বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো

২০২৫ জুন ০৩ ০৯:৫৫:২৮
­­বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো

ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান) : রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ শেয়ারবাজারের চলমান মন্দায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করার পরিবর্তে তা নিয়মিত প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। এরইমধ্যে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতে শুরু করেছে।

দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ অর্থবছরের ব্যবসায় মুনাফার তুলনায় অনেক বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যা কোম্পানিগুলোর বার্ষিক সাধারন সভা (এজিএম) শেষে শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরণ করা হবে। তবে এরইমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন হিসেবে একটি বড় অংশ নিয়ে গেছে।

দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশীদের ১৩টি বহূজাতিক কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলোতে বিদেশীদের বা উদ্যোক্তা/পরিচালকদের মালিকানা বেশি। যেগুলোর প্রতিটিই নিয়মিত বড় লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

ওই ১৩টি কোম্পানির মধ্যে বার্জার পেইন্টস ছাড়া বাকি ১২টির পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ অর্থবছরের ব্যবসায় লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। দেখা গেছে, ১২টি কোম্পানির নিট মুনাফা হয়েছে ৭ হাজার ৮১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা। তবে কোম্পানিগুলোর পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষনা করেছে ৯ হাজার ৫৩৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিগুলোর মুনাফার থেকে ১ হাজার ৭২৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকার বা ২২ শতাংশ বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করা হয়েছে।

অথচ দেশে বর্তমানে কিছুটা ডলার সংকটও চলছে। এরমধ্যেই বহূজাতিক কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ বাবদ হাজার হাজার কোটি টাকার ডলার বিদেশে পাঠানো হবে।

এবছর বহুজাতিক ১২টি কোম্পানির মধ্যে ৯টিরই পরিচালনা পর্ষদ মুনাফার থেকে বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করেছে। শুধুমাত্র বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো অব বাংলাদেশ (বিএটিবিসি), বাটা সু ও হাইডেলবার্গ সিমেন্টের পর্ষদ মুনাফার চেয়ে কম লভ্যাংশ ঘোষনা করেছে।

এ বিষয়ে এক মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, বিদেশীরা লভ্যাংশ তাদের দেশে নিয়ে যাবে, এটা স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু যারা এই দেশে বিনিয়োগ করে উপকৃত হচ্ছেন, তাদেরও সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করা দরকার। তারা এই মুহূর্তে নগদ লভ্যাংশ কমিয়ে দিয়ে ডলার সংকটরোধে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া বোনাস দেওয়ার সুযোগতো রয়েছেই। বহূজাতিক কোম্পানির বোনাসের অনেক চাহিদা শেয়ারবাজারে আছে।

একই বিষয়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক কর্মকর্তা অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, বহুজাতিক কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে বিএসইসির বাধাঁ দেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। তবে দেশের বর্তমান অবস্থায় ওইসব কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা নগদ লভ্যাংশের চেয়ে পূণ:বিনিয়োগ বা বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারে। এতে করে শেয়ারবাজার এবং দেশের অর্থনীতি উপকৃত হবে।

নিম্নে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ ও মুনাফার তথ্য তুলে ধরা হল-

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে মুনাফার তুলনায় সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করেছে গ্রামীনফোনের পর্ষদ। এ কোম্পানিটির ৩ হাজার ৬৩০ কোটি ৯৬ লাখ টাকার মুনাফার বিপরীতে ৪ হাজার ৪৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লভ্যাংশ ঘোষনা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মুনাফার থেকে ৮২৫ কোটি ৩ লাখ টাকার বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করা হয়েছে।

পরের অবস্থানে থাকা ম্যারিকো বাংলাদেশে মুনাফার থেকে ৬১৯ কোটি ১ লাখ টাকার বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করা হয়েছে। আর ৩য় অবস্থানে থাকা লাফার্জহোলসিমে ১১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার বেশি লভ্যাংশ ঘোষনা করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে