ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

শাস্তির বিধানের পরেও শুধু বোনাস ঘোষণা

এখনো শেষ হয়নি শেয়ারহোল্ডারদের বঞ্চিত করে মূলধন শক্তিশালীকরন

২০২৪ মে ০১ ১৪:২৮:০৯
এখনো শেষ হয়নি শেয়ারহোল্ডারদের বঞ্চিত করে মূলধন শক্তিশালীকরন

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার রেকর্ড খুবই নগণ্য। নিয়মিত বোনাস শেয়ার দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিতে। তারপরেও ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালের ব্যবসায়ও শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার ঘোষণার মাধ্যমে অর্জিত মুনাফার শতভাগ কোম্পানিতে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবারও মূলধনের ভিত্তি শক্তিশালীকরনে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্যাংকটির ২০২৩ সালে শেয়ারপ্রতি ১.৬৪ টাকা হিসেবে মোট ৩০০ কোটি ২১ লাখ টাকার নিট মুনাফা হয়েছে। তবে কোম্পানির পর্ষদ শুধুমাত্র ৫ শতাংশ বোনাস বা শেয়ারপ্রতি ০.৫০ টাকা করে মোট ৯১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা দিয়ে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুনাফার বাকি ২০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা রিজার্ভে যোগ হবে। এর মাধ্যমে কোম্পানির মুনাফার ১ টাকাও শেয়ারহোল্ডারদের মাঝে বিতরন করা হবে না।

এবারও মূলধনের ভিত্তি শক্তিশালীকরনে বোনাস শেয়ার ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইএফআইসি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

অথচ নগদ লভ্যাংশ প্রদানে উৎসাহিত করার জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। যে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদেও রয়েছে আইএফআইসি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারীরা।

ওই অর্থবছরের আয়কর পরিপত্র অনুযায়ি, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে কমপক্ষে বোনাস লভ্যাংশের সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি বোনাসের পরিমাণ নগদের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে পুরো বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

এ হিসেবে আইএফআইসি ব্যাংককে ৯১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার বোনাস শেয়ারের উপর ১০ শতাংশ হারে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত করবাবদ জরিমানা দিতে হবে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ি, এই ব্যাংকটি থেকে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার রেকর্ড খুবই নগণ্য। সর্বশেষ ২০২২ সালের ব্যবসায় ব্যাংকটি ২.৫০ শতাংশ দেওয়ার মাধ্যমে ১১ বছর পরে নগদ লভ্যাংশে ফিরেছিল। কিন্তু সেটা দুই বছরও চলমান রাখতে পারেনি।

নিয়মিতভাবে বোনাস শেয়ার দিয়ে ব্যাংকটিকে শীর্ষ পর্যায়ের পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি বানানো হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৭ সালে ১টি সাধারন শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ারও ইস্যু করা হয়। এরপরেও ২০২০ সালে আবারও রাইট ইস্যুর আবেদন করে। তবে কমিশন তা বাতিল করে দেয়।

এদিকে ব্যাংকটির ২০২৩ সালের ব্যবসায় পতন হয়েছে। আগের বছর কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছিল ১.৯৩ টাকা। যার পরিমাণ এ বছর নেমে এসেছে ১.৬৪ টাকায়। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে ০.২৯ টাকা বা ১৫ শতাংশ।

উল্লেখ্য ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আইএফআইসি ব্যাংকের বর্তমানে ১ হাজার ৮৩০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধন রয়েছে। লভ্যাংশে দুরবস্থার কারনে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) কোম্পানিটির শেয়ার দর নেমে এসেছে অভিহিত মূল্যের নিচে ৯.৬০ টাকায়।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে