ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

ট্রেডার ইমরানের প্রতারণায় বিনিয়োগকারীর ৩৪ লাখ হয়ে গেল ১ লাখ টাকা

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১১ ১০:০৫:০০
ট্রেডার ইমরানের প্রতারণায় বিনিয়োগকারীর ৩৪ লাখ হয়ে গেল ১ লাখ টাকা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : হযরত আমানত শাহ সিকিউরিটিজে প্রতারণার স্বীকার হয়ে রিয়াজুল ইসলাম নামের এক বিনিয়োগকারী নিঃশ্ব হয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্রোকারেজ হাউজটির ট্রেডারখ্যাত গেম্বলারদের দোসর মো: ইমরান চৌধুরী। যিনি গেম্বলারদের সহযোগিতায় ব্যবহার করেছেন রিয়াজুলের অর্থকে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দামে কিনে গেম্বলারদের সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া রিয়াজুলের অনুমোদন ছাড়াই নিয়মিত ক্রয়-বিক্রয় করেছেন। এতে করে রিয়াজুলের ৩৪ লাখ টাকার বিনিয়োগ সবশেষে ১ লাখ টাকা ফেরত পেয়েছেন রিয়াজুল। এ অবস্থায় দোষীদের বিচার দাবি করেছেন রিয়াজুল ইসলাম।

এলক্ষ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের কাছে রিয়াজুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ করেছেন।

রিয়াজুল ইসলাম বলেছেন, পূর্ব পরিচিত মো: ইমরান চৌধুরীর মাধ্যমে আমানত শাহ সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করেন। শুরুতে ২৪ লক্ষ টাকা জমা দেই। প্রথম দুই তিনটা ট্রেড করার পর ৪-৫ লক্ষ টাকা লাভ আসে, সেখান থেকে সে ২ লক্ষ টাকা তুলে দিতে আমাকে চাপ দেয়। জবাবে তিনি বলেন, যখন টাকা তুলব তখন সন্তুষ্ট হয়ে আপনাকে কিছু টাকা দিব, তাতে ইমরান অসন্তুষ্ট হন।

চিঠিতে তিনি বলেন, পরবর্তীতে আমি লক্ষ্য করি ইমরান আমার বিও কোডে অ্যাগ্রেসিভ ট্রেড করে এবং প্রতি তিন দিন অন্তর অন্তর শেয়ার ক্রয় ও সমস্ত শেয়ার বিক্রি করে দেয়। এতে করে আমার কোডের টাকা দ্রুত কমে যেতে শুরু করে দেখে আমি আমি তাকে ট্রেড করতে নিষেধ করি এবং আমানত শাহ সিকিউরিটিজে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, সে অনেক ব্যস্ততা দেখিয়ে সেকেন্ড ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন। ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করে আমার সমস্যার কথা জানাই এবং ইমরানকে আমার বিও কোডে আমার অনুমতি ছাড়া কোন ধরনের ট্রেড করতে নিষেধ করি।

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, সেকেন্ড ম্যানেজারের কাছে আমার কোডের সমস্ত ট্রেডের সামারি চাই, তখন সে জানায় তাদের আইটিতে সমস্যা থাকার কারণে সামারি বের করা এবং মেইল করা সম্ভব হয় না। পরবর্তীতে আমি ইমরানের সাথে আমার কোডের ব্যাপারে সাক্ষাতে কথা বলি এবং কিভাবে লস রিকোভার করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করি। সে আমাকে জানায় আমি আরো কিছু টাকা জমা দিলে, সে কিছু গেম্বলার এবং হিরুর সাথে কথাবার্তা বলে কিছু শেয়ার কিনে দিলে দুই মাসের মধ্যে সব টাকা কাভার হয়ে যাবে এবং লাভ হবে। এমনকি সে হিরুর সাথে তার ছবিও দেখান।

এরপরে তার পরামর্শ সরল বিশ্বাসে ও না জানিয়ে ট্রেড করা যাবে না শর্তে আবার ১০ লক্ষ টাকা জমা দেন বলে জানান ভুক্তভোগী। যা দিয়ে নতুন কিছু শেয়ার ক্রয় করে রেখে দিতে বলেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যক্তিগত কাজে দেশের বাইরে ও বিভিন্ন সময়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু ৫-৬ মাস পর টাকার দরকার হলে শেয়ার বিক্রি করতে চেয়ে লক্ষ্য করেন, এরইমধ্যে ইমরান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শেয়ার বছরের সর্বোচ্চ দামে ক্রয় করে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করেছে এবং অতিরিক্ত কমিশনের নেশায় শেয়ার তিন দিন পর পর ক্রয়-বিক্রয় করেছে।

এসব বিষয়ে ইমরানের কাছে এ জানতে চাইলে সে জবাব দেয়, যে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় তার বন্ধু করেছে। পরবর্তীতে অনেক রিকুয়েস্ট করে আমার সমস্ত শেয়ার সেল করে আমার টাকা সমস্ত টাকা দিয়ে দিতে বলি। তাতে সে আমাকে মাত্র এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেয়। পরে আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি তারা উক্ত হাউজেরই নিয়োগকৃত সুবিধাভোগী দালালচক্র। যাদের ব্যবহার করে আমানত শাহ সিকিউরিটিজ নিজেদের ও তাদের বিশ্বস্ত কিছু স্টেকহোল্ডারদের শেয়ার উচ্চ দামে বিভিন্ন পার্টির কোডে ধরিয়ে দেওয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায় ইমরান চৌধুরী গং ফেসবুকে BD STOCKMARKET নামে গ্রুপের এডমিন। সে সেখানে বিভিন্ন লোভনীয় অফার এবং গুজব ছড়িয়ে নিজেদের এবং হাউসের স্বার্থ হাসিল করে। তার কিছু প্রমাণ বিএসইসিতে দাখিল করেছে ভুক্তভোগী।

এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী রিয়াজুল ইসলাম, সমস্ত অর্থ হারিয়ে পাগল প্রায় অবস্থা এবং তিনিও তার পরিবার অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানিয়েছেন। এমতাবস্থায় বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে আমানত শাহ সিকিউরিটিজ এবং তার দোসরদের তদন্ত পূর্বক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ করেছেন।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে