ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী নাহিদের শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র

২০২৪ সেপ্টেম্বর ১১ ১৭:৪৯:০০
আওয়ামীলীগের সুবিধাভোগী নাহিদের শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগের অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন। যে কারনে কাউকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব এখনো রয়েছে। একইসঙ্গে বজায় রয়েছে আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের নীতি। এরই ধারাবাহিকতায় শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন নাহিদ। এমন ব্যক্তিকে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা ঠিক হয়নি বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। ফলে অতি দ্রুত তার নিয়োগের বাতিল দাবি করেছেন তারা।

এই নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াতের সরাসরি ছাত্র। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধাভোগী অর্থ মন্ত্রণালয়ের শেয়ারবাজার বিভাগের প্রধান ড. নাহিদ হোসেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি একই দায়িত্বে রয়েছেন। বিএসইসিতে চেয়ারম্যান হিসাবে শিবলী রুবাইয়াতের দ্বিতীয়বার নিয়োগে পূর্ণ সহায়তা করেন তিনি।

ড. নাহিদ ব্যক্তিগতভাবে শিবলী রুবাইয়াতের সহযোগী এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম সুবিধাভোগী। সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক হয়েছেন নাহিদ হোসেন। এক্ষেত্রে অবশ্য আইনের পরিপালন হয়নি বলে বিতর্ক আছে। ফলে তার নিয়োগের বিষয়টি শেয়ারবাজারের সবার মুখে মুখে।

অথচ ডিএসই রেগুলেশন, ২০১৩ এর ৫ ধারার (জে) উপধারায় বলা হয়েছে, কোন নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মী ডিএসইর স্বাধীন পরিচালক হতে পারবেন না। তারপরেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেনকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক করে নিয়োগ দেয় বিএসইসি। এখন অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া নাহিদ এখন বিএসইসিরই বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

নাহিদ বিএসইসির কমিশনার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিএসইসি কমিশনার ড. তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগে চাপ দিয়েছেন। সোমবার বিকালে ফোন করে তিনি ড. তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বলেন। এ সময় তিনি বলেন, ড. সালেহউদ্দিন তাকে দ্রুত ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠাতে বলেছেন। ড. তারিকুজ্জামানও বিষয়টি অর্থ বাণিজ্যকে নিশ্চিত করেন। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে, এ ধরনের কথা তিনি বলেননি। অতিরিক্ত সচিবের এ ধরনের কাণ্ডে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও কমিশনার তারিকুজ্জামানের পদত্যাগ চেয়ে অর্থ উপদেষ্টার কাছে শিক্ষার্থীদের নাম করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠিতে কারও স্বাক্ষর নেই। যে ছাত্রদেরকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগের জন্য সোমবার বিকালে মোবাইল ফোনে কল করেন তিনি। ফোনে ড. নাহিদ বলেন, ‘অর্থ উপদেষ্টা আপনাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। রাতেই ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান।’ তারিকুজ্জামান বলেন, ‘ঠিক আছে, আমি কাল সকালে মন্ত্রণালয়ে এসে উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে তার হাতে পদত্যাগপত্র দেব।’ জবাবে ড. নাহিদ বলেন, ‘আপনি পদত্যাগের পর দেখা করেন, তিনি (অর্থ উপদেষ্টা) ব্যস্ত আছেন, কাল আপনি শিডিউল পাবেন না। তাছাড়া আপনি কিন্তু উপদেষ্টার নির্দেশনা না মেনে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করছেন।’ তারিকুজ্জামান বলেন, ‘আমি সরকারকে চ্যালেঞ্জ করছি না, উল্টো সসম্মানে তার হাতে পদত্যাগপত্র দিতে চাচ্ছি।’

ড. নাহিদ বলেন, পদত্যাগের দুইদিন পর আপনি দেখা করেন।’ তবে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি তারিকুজ্জামান। এদিকে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর সূত্র মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানায়, উপদেষ্টা এ ধরনের কথা কাউকে বলেননি। কেউ বলে থাকলে এটি তিনি ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন।

জানতে চাইলে ড. নাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) থেকে কাউকে পদত্যাগের জন্য ফোন দেওয়া হলে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে দেওয়া হয়।’ তবে তার সঙ্গে এ বিষয়ে ড. তারিকুজ্জামানের কোনো কথা হয়নি। তিনি বলেন, বিএসইসি থেকে চিঠি দিয়ে এফআইডির একজন প্রতিনিধি চাওয়া হয়েছে। সে হিসাবে তিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে