ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২

১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের ক্রাউন সিমেন্টের ২.১০ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা

২০২৫ অক্টোবর ২১ ০৮:৪৩:০৬
১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের ক্রাউন সিমেন্টের ২.১০ টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা

হোয়াট হ্যাপেনড কুদ্দুস? লুক স্যার ক্রাউন সিমেন্ট, সো? মেড ইন বাংলাদেশ স্যার! ইওর বিল্ডিং মাই কান্ট্রিজ সিমেন্ট স্যার! উই আর ভেরি প্রাউড স্যার! এভাবে প্রবাসিদের নিয়ে গর্বিত করে প্রচারনা চালালেও ক্রাউন সিমেন্ট নিয়মিত হতাশ করছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের।

ক্রাউন সিমেন্টের পণ্যের উপর বিশ্ব আস্থা রাখে বলে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দাবি করলেও শেয়ারবাজারে অনাস্থায় ডুবছে। ক্রাউন সিমেন্ট রপ্তানির শীর্ষ ও বাংলাদেশের গ্লোবাল সিমেন্ট বলে দাবি করা কোম্পানিটিই এখন হতাশ করছে বিনিয়োগকারীদের।

তবে শুধুমাত্র অভিহিত মূল্যে শেয়ারবাজারে আসা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ অনেক ভালো করছে। ক্রাউন সিমেন্টের গত অর্থবছরের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪) ১.৫২ টাকা শেয়ারপ্রতি মুনাফাকে (ইপিএস) লাফার্জহোলসিম ছাড়িয়ে গেছে ৬ মাসেরই ব্যবসায়। এই কোম্পানিটির ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন ২০২৫) শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ২.০৩ টাকা। এ বহূজাতিক কোম্পানিটির ২০২৪ সালে ইপিএস হয়েছিল ৩.২৯ টাকা। যার উপর ভিত্তি করে রেকর্ড ৩৮% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল।

অথচ ভালো ব্যবসা দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিংয়ে উচ্চ দরে শেয়ার ইস্যু করে ক্রাউন সিমেন্ট। তবে এখন সেই কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয় মাত্র ২১ শতাংশ বা ২.১০ টাকা। যে কোম্পানিটিতে বিনিয়োগ করে ক্যাপিটাল ও লভ্যাংশ উভয় ক্ষেত্রেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে।

কোম্পানিটি ২০১০-১১ অর্থবছরে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসে। ওইসময় প্রতিটি শেয়ার ১১১.৬০ টাকা করে ইস্যু করে। এতে প্রতিটি শেয়ারে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে ১০১.৬০ টাকা। কিন্তু সেই কোম্পানি সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ব্যবসায় মাত্র ২১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা দিয়েছে। যা ইস্যু মূল্য বিবেচনায় ২ শতাংশেরও কম বা ১.৮৮ শতাংশ।

এ কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে ২০১১ সালে ৩৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেওয়ার পরে প্রতি শেয়ারে ব্যয় (কস্ট) দাঁড়ায় ৮২.৬৭ টাকা। এরপরে ২০১২ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেওয়ার পরে তা নেমে আসে ৭৫.১৫ টাকায়। এখন সেই কস্ট ভ্যালুর বাজার দর আছে ৫৩.১০ টাকায়। এতে প্রতিটি শেয়ারে ক্যাপিটাল লোকসান আছে ২২.০৫ টাকা।

এদিকে ওই ৭৫.১৫ টাকায় গত ১৪ বছরে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে ২৬.৬০ টাকা। তবে ৭৫.১৫ টাকা ব্যাংকে এফডিআরে ৫ শতাংশ সুদেও বছরে ৩.৭৬ টাকা পাওয়া যেত। যাতে ১৪ বছরে সরল হিসাবে আসত ৫২.৬৪ টাকা। একইসঙ্গে ২২.০৫ টাকা ক্যাপিটাল লোকসান থেকে রক্ষা হত।

ক্রাউন সিমেন্ট থেকে ২০১৩ সালে ৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা হয়। এরপরে ২০১৪ সালে কমিয়ে ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়া হয়। যা ধারাবাহিকভাবে কমে ২০১৫ সালে ২৫ শতাংশ, ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ১৫ শতাংশ, ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ, ২০২০ সালে ১০ শতাংশ, ২০২১ সালে ২০ শতাংশ, ২০২২ সালে ১০ শতাংশ, ২০২৩ সালে ২০ শতাংশ ও ২০২৪ সালে ২১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। আর ২০২৫ সালে ২১ শতাংশ করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।

এমআই সিমেন্টের আইপিও পূর্ব ২০০৮-০৯ অর্থবছরের ৯.৩৯ টাকার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নেমে এসেছে ৪.৫২ টাকায়। ১৬ বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস কমেছে ৪.৮৭ টাকা বা ৫২ শতাংশ।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে