ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ

আইএফআইসি ব্যাংক ধংসের পথে : ঝুঁকিতে গ্রাহকদের আমানত

২০২৫ আগস্ট ০৭ ১০:০০:৫০
আইএফআইসি ব্যাংক ধংসের পথে : ঝুঁকিতে গ্রাহকদের আমানত

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের আমানতের হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ করেছে সালমান এফ রহমান চক্র। যেসব ঋণ এখন খেলাপি হয়ে গেছে। যাতে আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় গ্রাহকদের আমানত ঝুঁকিতে পড়েছে।

দেখা গেছে, ঋণের নামে টাকা আত্মসাতের কারনে ব্যাংকটির ২০২৪ সালে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা টাকা বা শেয়ারপ্রতি ৯৫ টাকা লোকসান হয়েছে। তবে এ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই বছরের ব্যবসায় ১২১ কোটি টাকা বা শেয়ারপ্রতি ০.৬৩ টাকা লোকসান দেখিয়েছে।

ব্যাংকটির ২০২৪ সালের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ খাতের সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশে গ্রাহকদের স্বল্পমেয়াদি আমানতকে ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দিয়ে থাকে। এটা খুবই বাজে সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এর উপরে আবার রাজনৈতিক প্রভাবে ব্যাংক দখল করে সালমান এফ রহমানদের মতো চক্র অস্তিত্বহীন ও অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যার মাধ্যমে গ্রাহকদের আমানতকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। এদের কারনে এখন অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের আমানত দিতে পারছে না। যাতে আমানতকারীরা এখন অসহায়ের মতো ঘুরছে।

আইএফআইসি ব্যাংকের ২০২৪ সালে শেয়ারপ্রতি ০.৬৩ টাকা করে নিট লোকসান দেখানো হয়েছে ১২১ কোটি ৯ লাখ টাকা। আর নিট সম্পদ ৩ হাজার ৪৯০ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি নিট ১৮.১৬ টাকা সম্পদ দেখানো হয়েছে।

তবে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এ ব্যাংকটির বিনিয়োগের বিপরীতে ২০২৪ সালে ১৯ হাজার ৮৯৯ কোটি ৮৪ টাকা প্রভিশন বা সঞ্চিতি দরকার ছিল। তবে এ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সঞ্চিতি করেছে ১ হাজার ৩৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে সঞ্চিতি ঘাটতি ১৮ হাজার ৫৫৭ কোটি ৩ লাখ টাকা। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের মাধ্যমে পরবর্তীতে গঠন করার সুযোগ পেয়েছে ব্যাংকটি।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সুযোগ আন্তর্জাতিক হিসাব মানের সঙ্গে সামঞ্জসূপূর্ণ না। কারন ব্যাংকটিকে এখন সঞ্চিতি গঠন থেকে বিরত থাকার সুযোগ দিলেও ভবিষ্যতে ঠিকই করতে হবে। সেটার প্রভাব এখন না দেখিয়ে ভবিষ্যতে দেখানো হবে। এটা এক ধরনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা।

হিসাব মান অনুযায়ি ব্যাংকটির ২০২৪ সালেই আরও ১৮ হাজার ৫৫৭ কোটি ৩ লাখ টাকা সঞ্চিতি গঠন করা দরকার ছিল। যা করা হলে ব্যাংকটির ওই বছরে ১৮ হাজার ৬৭৮ কোটি ১২ লাখ টাকা বা শেয়ারপ্রতি (৯৭) টাকা লোকসান হতো।

এদিকে ওই প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি ২০২৪ সালে গঠন করা হলে ব্যাংকটির নিট সম্পদ ঋণাত্মক ১৫ হাজার ৬৬ কোটি ৫২ লাখ টাকায় বা শেয়ারপ্রতি সম্পদ ১৮.১৬ টাকা থেকে কমে ঋণাত্মক (৭৮) টাকায় নেমে আসতো।

আরও পড়ুন....

ইউসিবির মূলধন ঘাটতি ৯৭৩ কোটি টাকা

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া আইএফআইসি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১ হাজার ৯২২ কোটি ৯ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৭.২৫ শতাংশ। কোম্পানিটির বুধবার (০৬ আগস্ট) শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ৬.৭০ টাকায়।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে