ঢাকা, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

কারসাজির শেয়ারের পেছনে ছুটা মোহসিন ১৭ লাখ বিনিয়োগকারীর নিরাপত্তার দায়িত্বে

২০২৫ মে ১২ ০৯:২৭:৫৫
কারসাজির শেয়ারের পেছনে ছুটা মোহসিন ১৭ লাখ বিনিয়োগকারীর নিরাপত্তার দায়িত্বে

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যার প্রধান কাজ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুরক্ষা দেওয়া। এ দায়িত্বে শীর্ষে রয়েছে কমিশনের চেয়ারম্যানসহ ৪ কমিশনার। অথচ নিজের বিনিয়োগের নিরাপত্তা দিতেই ব্যর্থ অযোগ্য রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সবচেয়ে সিনিয়র কমিশনার মোহসিন চৌধুরী। যিনি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে হারিয়েছেন এক-তৃতীয়াংশ পুঁজি। এছাড়া জেনেশুনে কারসাজির পেছনে ছুটেছেন টাকা নিয়ে। এমন একজন ব্যক্তি এখন ১৭ লাখ বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের সুরক্ষা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত।

একটি শীর্ষস্থানীয় মার্চেন্ট ব্যাংকের সিইও অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, কারসাজির শেয়ারে বিনিয়োগ করা ব্যক্তি আজ আমাদের কমিশনার। এরচেয়ে খারাপ আর কি হতে পারে। যে এই কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার আগে ৩০% এর বেশি লোকসান করেছে, সেতো নিজের বিনিয়োগের সুরক্ষা দিতে পারেননি। কিভাবে পোর্টফোলিও সাজাতে হবে, সেটাই সে বুঝে না। সে আর কতটা বুঝবে শেয়ারবাজার। তার কাছ থেকে এই বাজারের কিছু প্রত্যাশা করা বোকামি।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজার খুবই সংবেদনশীল ও টেকনিক্যাল জায়গা। তাই প্রধান রেগুলেটর বিএসইসিতে স্বাভাবিকভাবেই জ্ঞানী ও জানাশোনা ব্যক্তিদেরকে বিএসইসিতে চেয়ারম্যান-কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন শুরু থেকেই অযোগ্য ও জ্ঞানশুন্য খেতাব পেয়েছে। যাদের এ বাজার পরিচালনা করার মতো কোন যোগ্যতা নেই বলে অভিযোগ। এরমধ্যে কমিশনার মোহসিন চৌধুরী নিজের শেয়ার ব্যবসা দিয়ে অযোগ্যতার মাপকাঠিতে অন্যদেরকে ছাড়িয়ে গেছেন।

আরও পড়ুন.....

ফ্যাসিস্ট সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে মোহসিন- বিএসইসির কর্মকর্তাদের অভিযোগ

মোহসিন চৌধুরীর ২০২৪ সালের জুনের পোর্টফোলিও অনুযায়ি, তিনি শেয়ারবাজারে ওই সময় নিট বিনিয়োগ করেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এই অর্থ দিয়ে তিনি বেস্ট হোল্ডিংস, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ার কেনা ছিল। যার প্রতিটি শেয়ার তার কেনার চেয়ে কমে অবস্থান করছিল। এরমাধ্যমে তিনি ওইসময় আনরিয়েলাইজড লোকসানে ছিলেন ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

তবে সব শেষে উনার পোর্টফোলিওতে ৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে নিট লোকসান ছিল ২ লাখ ৭ হাজার টাকা। যা তার বিনিয়োগের ৩১%।

এদিকে বিএসইসির কমিশনার পদে নিয়োগ পাওয়া এই মোহসিন চৌধুরী সালমান এফ রহমানের কারসাজির শেয়ার বেক্সিমকোতে বিনিয়োগ করেছেন সর্বোচ্চ চূড়ায়। সর্বশেষ আপডেট পোর্টফোলিও অনুযায়ি, তিনি ২২৩১টি বেক্সিমকোর শেয়ার কিনেছেন। প্রতিটি শেয়ার ১৫৭.৭৮ টাকা ৩ লাখ ৫২ হাজার ১৫ টাকা দিয়ে কিনেছেন। যার বাজার দর রয়েছে ১১০.১০ টাকা করে মোট ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ টাকায়। এক্ষেত্রে তার লোকসান ১ লাখ ৬ হাজার ৩৭৪ টাকা বা ৩০.২২%। তবে ফ্লোর প্রাইস থাকায় বেক্সিমকোর শেয়ারটি ১১০ টাকায় রয়েছে। অন্যথায় শেয়ারটি অনেক তলানিতে চলে এসে মোহসিন চৌধুরীর লোকসান আরও বাড়ত।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বেক্সিমকোর শেয়ারটি নিয়ে একটি গ্রুপ কারসাজি করে। এটা রেগুলেটর থেকে শুরু করে সবাই জানতো। তারপরেও মোহসিন চৌধুরী কিনেছিলেন মানে তিনি কারসাজির শেয়ার বুঝেই কিনেছিলেন। সেই ব্যক্তি এখন শেয়ারবাজারের রেগুলেটরের উচ্চ পদে দায়িত্বরত। এরচেয়ে হতভাগা শেয়ারবাজার দুনিয়ায় আর হতে পারে না। এসব লোকদের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না, করলে সেটা বোকামি হবে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে