ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কোম্পানির টাকায় চেয়ারম্যানের কোরবানি

ঋণকে নগদ জমা দেখিয়ে পরিচালকদের নামে শেয়ার ইস্যু

২০২৪ এপ্রিল ২১ ১৭:২৫:২৬
ঋণকে নগদ জমা দেখিয়ে পরিচালকদের নামে শেয়ার ইস্যু

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে কারসাজির এক মূর্তমাণ মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার পরিবারের সদস্যরা। যারা এরইমধ্যে শেয়ারবাজার থেকে টাকা উত্তোলন শেষে ধংস করে ফেলেছে ড্রাগণ সোয়েটারকে। যারা এরপরে সোনালি লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে শেয়ারবাজারে এনেছেন। যে কোম্পানিতে টাকা না দিয়েই প্রায় ১০ কোটি টাকার শেয়ার নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা কোম্পানির নামে নেওয়া ঋণকে কোম্পানির হিসাবে জমা দিয়ে শেয়ার নিয়েছেন। এছাড়া রয়েছে আরও ১৭৫ কোটি টাকার ভয়াবহ দূর্ণীতি। যে কারনে বীমা কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ “সাসপেন্ড” ও প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্সের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও কয়েকজন পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ‘হুদা ভাসি চৌধুরী এন্ড কোম্পানি’ এর দাখিলকৃত প্রতিবেদনে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রমাণাদি পাওয়া যায়।

ক) কোম্পানির পরিচালক মিসেস নূর এ হাফজা, মিসেস ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, রূপালী ইন্সুরেন্স কোঃ, মিসেস শাকিয়া সোবহান চৌধুরী ও মি. শেখ মোহম্মদ ডানিয়েল এর নিকট থেকে কোনো টাকা গ্রহণ না করেই তাদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়েছে।

খ) কোম্পানির এফডিআর এর বিপরীতে সাউথ বাংলা ব্যাংক হতে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার ঋণ ও সঞ্চয়ী হিসাব হতে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা মোট ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে একই ব্যাংকে কোম্পানির হিসাবে জমা করা হয়। যা উল্লিখিত পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়মূল্য হিসেবে প্রদর্শন করা হয়।

গ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দস তার স্ত্রী মিসেস ফজিলাতুন নেসা, পুত্র মোস্তফা কামরুস সোবহান ও কন্যা ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, তাসনিয়া কামরুন আনিকা, মোস্তফা কামরুস সোবহান তার স্ত্রী শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, তাসনিয়া কামরুন আনিকার স্বামী শেখ মোহাম্মদ ড্যানিয়েল পরস্পরের মধ্যে শেয়ার হস্তান্তর করে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম শেয়ার ধারণের মাধ্যমে পরিবারের ০৭ জন সদস্য কোম্পানির বোর্ডে পরিচালক রেখে পারিবারিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে অনিয়মের সুযোগ তৈরী করেছেন।

ঘ) জুলাই, ২০২৩ হতে কোম্পানির ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩,০০,০০,০০০/- টাকা হিসেবে মোট ১৮ কোটি টাকা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটারকে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে প্রদান করা হয়।

ঙ) বোর্ড সভার কার্যবিবরণীর জাল উদ্ধৃতাংশ দাখিল করে কোম্পানির এফডিআর এর বিপরীতে স্যোশ্যাল ইসলামি ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক হতে মোট ১৯৫ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা ঋণ গ্রহণ এবং তারমধ্যে ৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা কোম্পানির বিভিন্ন এ্যাকাউন্টে কয়েকবার স্থানান্তরের পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক একাউন্টে জমা করে। যা আত্মসাৎ এবং ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ ইতোমধ্যে ১৮ কোটি ২৯ লাখ ৭ হাজার ৪৯৮ টাকা কোম্পানির ক্ষতি সাধন হয়েছে।

চ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পেরয়িাল ভবন কোম্পানি কর্তৃক ক্রয়ের জন্য স্বাক্ষরিত ২টি সমঝোতা চুক্তির ফটোকপি তদন্তকালে পাওয়া যায়। তারমধ্যে ০৫/১০/২০২১ তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে জমি ও ভবনের মূল্য ৩৫০ কোটি টাকা এবং ১২/১২/২০২২ তারিখে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে মূল্য ১১০ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা মূল্য উল্লেখ আছে। উভয় চুক্তিই স্বাক্ষরকারী কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত সি.ই.ও. রাশেদ বিন আমান (১ম পক্ষ) ও মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস (২য় পক্ষ) এবং সাক্ষী হিসেবে মিসেস নূর এ হাফজা ও মি. মোস্তফা কামরুস সোবহান। জমি/ভবনের ক্রয়ের উদ্দেশ্য, মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, ধার্যকৃত মূল্য ও অন্যান্য শর্ত নির্দিষ্ট করে সমঝোতা চুক্তি দুটির কোনোটির বিষয়েই বোর্ডের কোনো সিদ্ধান্ত নেই এবং অসৎ উদ্দেশে চুক্তি দুটি করা হয়েছে।

ছ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কম্যুনিকেশন লি:, ড্রাগন সোয়েটার লি:, ইম্পেরিয়াল সোয়েটার লি: ও ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লি: বরাবর বিভিন্ন সময়ে ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান। যা এ্যাকাউন্ট হেডে “মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস, ল্যান্ড ওনার, এ্যাডভান্স এগেইন্সট ল্যান্ড" লেখা আছে। স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়ের নিমিত্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিত অগ্রিম পরিশোধ অবৈধ। প্রকৃতপক্ষে আত্মসাৎকৃত অর্থ জমি/ভবন ক্রয়ের অগ্রিম হিসেবে বৈধতা দেয়ার অপপ্রয়াস নেয়া হয়েছে।

জ) ইম্পেরিয়াল ভবন ১২.৫০ কাঠা জমির উপর নির্মিত হলেও ৭ কাঠা জমির উপর ভবন নির্মাণের জন্য রাজউকের অনুমোদন আছে। অবশিষ্ট ৫.৫০ কাঠার বরাদ্দপত্র, লীজ চুক্তি ও ভবন নির্মাণের অনুমোদন নেই। ফলে জমির মালিকানা নিষ্কন্‌টক নয় ও ভবন নির্মাণ অবৈধ।

ঝ) কোম্পানির তহবিল থেকে ২০২১-২৩ মেয়াদে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ড্রাগন সোয়েটার লি: কে সোয়েটার ক্রয়বাবদ ২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, ইম্পেরিয়াল স্যুটস এন্ড কনভোকেশন সেন্টারকে আপ্যায়ন বাবদ ১ কোটি ৭৮ লাখ ৬২ হাজার ৫৯২ টাকা এবং ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কম্যুনিকেশন লি:-কে ইআরপি মেইনটেনেন্স ও সোয়েটার ক্রয় বাবদ ৩ কোটি ৪২ লাখ ৬২২৫ টাকা অর্থাৎ মোট ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৬৮ ৮১৭ টাকা অবৈধভাবে প্রদান করা হয়।

ঞ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে ও তার পরিবারের ৬ সদস্য এবং আরেকজন পরিচালক সাবেক চেয়ারম্যান নুর এ হাফজাসহ মোট ৮ জন পরিচালক অবৈধভাবে মাসিক বেতন হিসাবে মোট ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা গ্রহণ করে।

ট) আইডিআরএ এর সার্কুলার অমান্য করে চেয়ারম্যানের জন্য ১.৭০ কোটি টাকায় একটি বিলাসবহুল গাড়ি( Audi car) ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৩৬৯৫০ ক্রয় এবং ২০২১-২৩ মেয়াদে নতুন গাড়ির কথিত রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২১ লাখ ৫২ হাজার ৫০৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়।

ঠ) কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ডে অতিরিক্ত ডিভিডেন্ড বাবদ বিবিধ খাত থেকে রুপালী ইন্সুরেন্স কো: এবং পরিচালক নুর এ হাফজাকে মোট ১ কোটি ৬০ লাখ ১০৭৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। যা অবৈধ ও আত্মসাৎ।

ড) কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের বিদেশে চিকিৎসার খরচ বাবদ ১ কোটি ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ টাকা, ভ্রমণ ও শপিং বাবদ ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮০ টাকা এবং মেয়ের foreign study ব্যয়বাবদ ৪৫ লাখ ১৫,০০০ টাকা অর্থাৎ মোট ১ কোটি ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার ২৮০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তেলেন করে পেটিক্যাশ খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে। যা অবৈধ ও আত্মসাৎ।

ঢ) পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ড্যানিয়েলকে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার ওনার এসোসিয়েশনের গ্রুপ বীমা পলিসি থেকে অবৈধভাবে ৯ লাখ টাকা কমিশন প্রদান এবং তিনি পদত্যাগ করে পরিচালক না থাকাকালীন ১১টি বোর্ড সভায় অবৈধভাবে অংশগ্রহণ ও ৮৮ হাজার টাকা সম্মানী গ্রহণ করেন এবং পরিচালক না হয়েও চেক স্বাক্ষর করেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

ণ) মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের ব্যক্তিগত ঋণ সমন্বয় বাবদ ২০১৬-১৮ সালে ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিজিএমইকে অনুদান ৫২ হাজার ৫০০ টাকা, এসি (আনিকার জন্য) ক্রয় ১ কোটি ৮১ লাখ ৭৭৮ টাকা, বিবাহ বার্ষিকীর উপহারবাবদ ১৫ লাখ টাকা, এমডির জন্মদিন উদযাপনের সাজসজ্জা, ডায়মন্ড রিং ইত্যাদি বাবদ ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ২০২২ সালে চেয়ারম্যানের কুরবানির গরু ও ২০২৩ সালে ঈদে এতিমখানার জন্য গরু ক্রয় বাবদ ৯ লাখ ২৭ টাকা, পারিবারিক বিনোদন- সোনারগাঁও হোটেলের বিল ও ফ্যান্টাসি কিংডম ভ্রমণ ব্যয় ৩ লাখ ৪২ হাজার ২৪০ টাকা, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিদেশ (লন্ডন, দুবাই ইত্যাদি) ভ্রমণ ব্যয় ৪ কোটি ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬১ টাকা, আইপিও খরচের নামে অতিরিক্ত ১ কোটি টাকা, পলিসি নবায়ন উপহার বাবদ নিজ প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ কোটি ৫২ লাখ ৬৭ হাজার ২০০ টাকা সর্বমোট ৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫৯ টাকা প্রদান করা হয়েছে। যা অবৈধ ও কোম্পানির অর্থ আত্মসাৎ।

ত) কোম্পানির অফিসের জন্য মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন ইম্পেরিয়াল ভবনের ২০১৩ সাল হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ভাড়ার চুক্তি দেখিয়ে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভাড়া বাবদ ১১ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ১৭ টাকা ড্রাগন সোয়েটারকে অবৈধভাবে প্রদান করা হয়েছে।

থ) ইম্পেরিয়াল ভবনে সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কো: ছাড়াও (1) ইম্পেরিয়াল ক্যাফে (২) ন্যাশনাল ব্যাংক লি:(৩) ইম্পেরিয়াল স্যুটস এন্ড কনভেনশন সেন্টার, (৪) স্টার্লিং স্টক এন্ড সিকিউরিটিজ লি: (৫) রূপালী ইন্সুরেন্স কো: (৬) ইম্পেরিয়াল হেল্থ ক্লাব (জিম) থাকলেও পুরো ভবনের বিদ্যুৎ ও ওয়াসার বিল সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কো: থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৪২ হাজার ২২৩ টাকা পরিশোধ করে কোম্পানির আর্থিক ক্ষতি সাধন ও অবৈধভাবে সুবিধা গ্রহণ করা হয়েছে।

দ) ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লি: এর ট্যাক্স বাবদ কোম্পানির বিবিধ খাত হতে ১৩ লাখ ৭৫ টাকা উপকর কমিশনার, সার্কেল ২২৮, জোন ১১ বরাবর পরিশোধ করা।

ধ) উপর্যুক্ত বিবরণ অনুযায়ী অবৈধভাবে কোম্পানির তহবিল থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ মোট ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ ১৫ হাজার ১৬৬ টাকা। এরপরেও নিরীক্ষক জানিয়েছেন, তদন্ত কার্যক্রম কার্যপরিধির মধ্যে সীমিত রেখে নমুনা ভিত্তিক যাচাইয়ের ফলে সকল অনিয়মের তথ্য এ প্রতিবেদনে আসেনি। পূর্ণাঙ্গ আর্থিক চিত্রের জন্য কোম্পানিটির বিস্তারিত নিরীক্ষা প্রয়োজন। কোম্পানির অসম্পূর্ণ তথ্য সংরক্ষণ বা তথ্য গোপন, অস্বচ্ছ হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি, অভ্যন্তরীণ কন্ট্রোল সিস্টেমের অনুপস্থিতি এবং মূখ্য নির্বাহি কর্মকর্তাসহ ব্যাংক সিগেনেটরিরা প্রায় সবাই একই পরিবারের সদস্য হওয়ায়, কোম্পানির অর্থ আত্মসাতের সহায়ক হয়েছে। এছাড়া বছরে গড়ে ২২ কোটি বা মাসে প্রায় ২ কোটি টাকা পেটি ক্যাশ হিসেবে ব্যয় হয়েছে এবং এককালীন বড় অংকের লেনদেন ক্যাশ চেকে হয়েছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী ও অর্থ তসরূপের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

সার্বিক পর্যলোচনায় সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানীর বোর্ডের কতিপয় পরিচালকের দ্বারা কোনো আইন ও আর্থিক বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে পরিচালনার ফলে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে এবং বীমাকারী ও বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ মারাত্মক হুমকীর সম্মুখীন হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এবং বীমাকারীও বিপুল সংখ্যক বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার্থে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে বীমা আইন, ২০১০ এর ৯৫ ধারা মোতাবেক কোম্পানীর বোর্ড "সাসপেন্ড" করে কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীনে বীমাকারীর কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য প্রশাসক নিয়োগ করা সমীচীন প্রতীয়মান হয়।

এর ধারাবাহিকতায় গত ৪ এপ্রিল তারিখের 53.03,0000,071,27.029.23.46 নং স্মারকে বীমা আইন, ২০১০ এর ৯৫(১) ধারা মোতাবেক এ বিষয়ে বোর্ডের কোনো বক্তব্য থাকলে তা ৫ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিলের জন্য এবং মৌখিক শুনানীতে ইচ্ছুক হলে ১৮/০৪/২০২৪ তারিখ সকাল ১১.০০টায় কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষ-১ এ উপস্থিত থাকার জন্য সোনালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়। এক্ষেত্রে লিখিত জবাব দেওয়া হলেও তা গ্রহণযোগ্য হয়নি।

এমতাবস্থায়, বীমাকারী ও বিপুল সংখ্যক বীমা গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার্থে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত বীমাআইন, ২০১০ এর ৯৫ ধারা মোতাবেক নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইডিআরএ।

ক) বীমা আইন ২০১০ এর ধারা-৯৫(১) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর বিদ্যমান পরিচালনা পর্ষদকে ০৬ (ছয়) মাসের জন্য “সাসপেন্ড” করা হলো।

খ) কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীনে বীমাকারীর কার্যক্রম ব্যবস্থাপনার জন্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফেরদৌস,এনডিসি, পিএসসি, (অব:)-কে প্রশাসক নিয়োগ করা হলো।

গ) নিয়োজিত প্রশাসক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত মাসিক সম্মানী প্রাপ্য হবেন ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভাতাদি পাবেন।

ঘ) যথাশীঘ্র সম্ভব একটি যোগ্য দেশী/বিদেশী একটি অডিট ফার্ম দ্বারা কোম্পানির পূর্ণাঙ্গ অডিট সম্পন্ন করতে হবে।

ঙ) নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসক বীমা আইন ২০১০ এর ধারা-৯৬(১) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের নিকট যথাশীঘ্র একটি প্রতিবেদনদাখিল করবেন ও বীমা আইন ২০১০ এর ৯৫(৩) ধারার আলোকে বীমা পলিসি ইস্যুসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

আইডিআরএ এ আদেশ জারী করেছে এবং তা আজ (২১ এপ্রিল) তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে