ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

শেয়ারবাজারে আসছে ১৮ ব্যাংকের ১৪৭ কোটি বোনাস শেয়ার

২০২৪ মে ০৭ ১০:৩৪:২০
শেয়ারবাজারে আসছে ১৮ ব্যাংকের ১৪৭ কোটি বোনাস শেয়ার

ইব্রাহিম হোসাইন (রেজোয়ান) : শেয়ারবাজারে আসছে তালিকাভুক্ত ১৮ ব্যাংকের ১৪৭ কোটি বোনাস শেয়ার। যা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্মতি ও ব্যাংকগুলোর বার্ষিক সাধারন সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনক্রমে তাদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবে পাঠানো হবে। এতে ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন বাড়বে। যে শেয়ারগুলোর বর্তমানে বাজার দর রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি।

দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ব্যবসায় শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে ২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। এছাড়া ১৬টি ব্যাংকের পর্ষদ নগদের পাশাপাশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ ২০২৩ সালের ব্যবসায় ১৮টি ব্যাংকের বোনাস শেয়ার শেয়ারবাজারে যোগ হতে যাচ্ছে।

তালিকাভুক্ত ১৮ ব্যাংকের পর্ষদ ২০২৩ সালের ব্যবসায় ১৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৮২ হাজার ৮৩টি বোনাস শেয়ার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৪৬৭ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার ৮৩০ টাকার পরিশোধিত মূলধন বাড়বে।

একইসময়ে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ৩১টির পর্ষদ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এই ব্যাংকগুলোর পর্ষদ মোট ৩ হাজার ৩২২ কোটি ২৯ লাখ টাকার নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ বোনাস শেয়ারের দ্বিগুণের বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে নগদ লভ্যাংশে কড়াকড়ি আরোপের আগে সর্বশেষ ২০১৮ সালের ব্যবসায় ব্যাংকগুলো ২২০ কোটি ৩৩ লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৫টি বোনাস শেয়ার দিয়েছিল। ওই বছরের ব্যবসায় শুধুমাত্র বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল ১৬টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। আর ৮টি ব্যাংকের পর্ষদ নগদের পাশাপাশি বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল। অর্থাৎ ২০১৮ সালের ব্যবসায় ২৪টি ব্যাংকের বোনাস শেয়ার শেয়ারবাজারে যোগ হয়েছিল।

এদিকে সর্বশেষ ২০২২ সালের ব্যবসায় তালিকাভুক্ত ২৪ ব্যাংকের পর্ষদ ১৪২ কোটি ১৮ লাখ ৪ হাজার ৪৮৪টি বোনাস শেয়ার দেওয়ার ঘোষণা করে। এতে ব্যাংকগুলোর ১ হাজার ৪২১ কোটি ৮০ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪০ টাকার পরিশোধিত মূলধন বাড়ে।

শেয়ারবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে বোনাস শেয়ার দেওয়ার বিষয়টি একটু অন্য রকম। অনেক ব্যাংককে ব্যাসেল-২ এর শর্ত পরিপালনে বোনাস শেয়ার দিতে হচ্ছে। তবে অনেক ব্যাংকের নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার সক্ষমতাও নেই। একটা পর্যায়ে গিয়ে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। তারপরেও বোনাস শেয়ারের কারনে শেয়ারবাজার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছরই বোনাস শেয়ারের বড় চাপ বাজারে আসে।

এবার ব্যাংকগুলোর ঘোষিত বোনাস শেয়ারগুলোর বর্তমান (০৭ মে) বাজার দর রয়েছে ৩ হাজার ৬৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এই শেয়ার শেয়ারহোল্ডারদের দেওয়া হলেও তা সমন্বয় হয়ে প্রাপ্তি প্রায় শূন্য হয়ে যায়। কারন বোনাস শেয়ার রেকর্ড ডেটের দরের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। এতে বোনাস শেয়ার পাওয়ার আগের এবং সমন্বয় পরবর্তী বোনাস শেয়ারসহ দর একই হয়ে যায়।

উদাহরন স্বরূপ : কোন একটি ব্যাংকের পর্ষদ ৫% বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। যার রেকর্ড ডেট ছিল ৫ মে এবং ওইদিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ছিল ১২ টাকা। কিন্তু রেকর্ড ডেট এর পরের দিন শেয়ারটি ৫% বোনাস শেয়ার সমন্বয় করে ১১.৪০ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ রেকর্ড ডেটের দিন ১টি শেয়ারের যে দর ছিল, তা পরের দিন ৫% বোনাস শেয়ার সমন্বয় করে কমিয়ে আনা হয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, রেকর্ড ডেটের দিন ১টি শেয়ারের যে দর ছিল, পরের দিন বোনাস শেয়ারসহ ১.০৫টি শেয়ারের দর সমান হয়েছে।

নিম্নে ব্যাংকগুলোর ২০২৩ সালের ব্যবসায় পরিচালনা পর্ষদের ঘোষিত বোনাস শেয়ারের তথ্য তুলে ধরা হল-

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক শাকিল রিজভী অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, পরিচালকদের বোনাস শেয়ার নিয়ে খামখেয়ালিমূলক সিদ্ধান্তের কারনেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে নগদ লভ্যাংশে কড়াকড়ি আরোপের কারনে বোনাস শেয়ার কমে এসেছে।

এবারও সবচেয়ে বেশি বোনাস শেয়ার দেবে ইস্টার্ন ব্যাংক। ব্যাংকটি শেয়ারহোল্ডারদের ১২.৫০ শতাংশ হারে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ বোনাস শেয়ার দেবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ কোটি ৯ লাখ বোনাস শেয়ার দেবে ব্র্যাক ব্যাংক। আর সিটি ব্যাংক দেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৩ কোটি ৪৭ লাখ বোনাস শেয়ার।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে