ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

শেয়ার কারসাজির জন্য বীচ হ্যাচারির অতিরঞ্জিত মুনাফা

২০২৫ মে ০৬ ০৯:০৭:৪২
শেয়ার কারসাজির জন্য বীচ হ্যাচারির অতিরঞ্জিত মুনাফা

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে আরেক কারসাজির কোম্পানি বীচ হ্যাচারি। যে কোম্পানিটি দীর্ঘদিন পরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উৎপাদনে এসেই ভূয়া আয় ও মুনাফা দেখিয়ে প্রতারণা শুরু করে সাধারন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে। যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের হিসাবেও বজায় রয়েছে। এ কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ভূয়া আয় দেখানোর সঙ্গে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও মিথ্যা তথ্য দেয়। যে কারনে কোম্পানিটির আর্থিক হিসাব নিয়ে প্রতিবছর বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে নিরীক্ষক। যেখানে মিথ্যা আয় নিয়ে প্রতারণার চিত্র বেরিয়ে আসে।

কোম্পানিটির ভূয়া আয় ও মুনাফা দেখানোর পেছনে কারন হিসেবে রয়েছে শেয়ার কারসাজি। ব্যবসায় দূর্বল এ কোম্পানিটির শেয়ার দর এখন ৬০.৩০ টাকায় অবস্থান করছে। তবে কারসাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানো এ শেয়ারটির দর গত ২৫ মার্চও ছিল ১২০ টাকার উপরে।

এরপরে মাকসুদ কমিশনের উপরে অনাস্থা ও বীচ হ্যাচারির প্রতারণা বুঝতে পেরে কোম্পানিটি থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিতে থাকে বিনিয়োগকারীরা। যাতে শেয়ারটি ৬০ টাকায় নেমে এসেছে। তবে কিছু গেম্বলার এখনো আটকে আছে শেয়ারটিতে। তাই কোম্পানির উদ্যোক্তা/পরিচালকদের যোগসাজোশে কৃত্রিম ও অতিরঞ্জিত মুনাফা দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।

অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য লড়াই করা এই কোম্পানিটি কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই ২০২৪-মার্চ ২০২৫) শেয়ারপ্রতি মুনাফা দেখিয়েছে ৪.৫৮ টাকা। যার পরিমাণ এর আগের বছরের একই সময়ে দেখিয়েছিল ১.৯২ টাকা। এতে করে শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ২.৬৬ টাকা বা ১৩৯ শতাংশ।

আরও পড়ুন.....

বীচ হ্যাচারিতে কোটি কোটি টাকার ভূয়া সম্পদ

অথচ প্রতিবছরই কোম্পানিটির আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় বিভিন্ন অনিয়ম খুঁজে পায় নিরীক্ষক। এরমধ্যে সর্বশেষ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বীচ হ্যাচারি কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে ২২ কোটি ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি দেখিয়েছিল। কিন্তু নিরীক্ষক ব্যাংক হিসাবে পায় মাত্র ৩ কোটি ৮ লাখ টাকার আয়।

এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন অর্থ বাণিজ্যকে বলেন, কৃত্রিম আর্থিক হিসাব দেখানো নতুন কিছু না। এর পেছনে প্রধান কারন হিসেবে রয়েছে শাস্তির আওতায় না আসা। বীচ হ্যাচারির ক্ষেত্রেও হয়তো আমরা সেটাই দেখতে পাবো।

তিনি বলেন, সাধারনত নিরীক্ষকরা কৃত্রিম আর্থিক হিসাব দেখাতে কোম্পানিগুলোকে সহযোগিতা করেন। সেখানে বীচ হ্যাচারি নিয়ে নিরীক্ষক যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তাহলে কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা যে আরও কত ভয়াবহ, তা অকল্পনীয়। এমন একটি কোম্পানিকে কিন্তু শাস্তির আওতায় আনতে কোন পরিশ্রম করতে হবে না। নিরীক্ষকের তথ্যই শাস্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বীচ হ্যাচারির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৫.০৩ শতাংশ।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে