ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

মাকসুদের সহযোগিতায় তারিকুজ্জামানকে বিতাড়িত করা সেই নাহিদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে দুদক

২০২৫ মে ১৩ ২১:১৫:৩৮
মাকসুদের সহযোগিতায় তারিকুজ্জামানকে বিতাড়িত করা সেই নাহিদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে দুদক

অর্থ বাণিজ্য প্রতিবেদক : স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগের অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন। যে কারনে কাউকে তোয়াক্কা না করার মনোভাব বর্তমান সরকারের সময়ও ছিল। একইসঙ্গে বজায় রয়েছে আওয়ামীলীগের ষড়যন্ত্র তত্ত্বের নীতি। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অযোগ্য চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে সঙ্গে নিয়ে তিনি শেয়ারবাজারকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্র করেন। যে কারনে বিএসইসি হারায় ড. তারিকুজ্জামানের মতো একজন মেধাবী কমিশনারকে। তবে এবার নাহিদেরই অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এলক্ষ্যে সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হাসানকে নিয়োগ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রুবেল হাসান নাহিদ হাসান অনুসন্ধান করে দিয়েছেন। যার ধারাবাহিকতায় সাধারন বীমা কর্পোরেশন নাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে কোন প্রিমিয়াম ক্রয় করা আছে কিনা, তা জানতে চেয়ে বীমা কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন...

বিএসইসির বিতর্কিত নিয়োগ দেওয়া নাহিদের ডিএসই থেকে পদত্যাগ

ড. নাহিদ আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম সুবিধাভোগী। যিনি আওয়ামী সরকারের পতনের পরে শেয়ারবাজার নিয়ে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নাম ভাঙ্গিয়ে বিএসইসি সাবেক কমিশনার ড. তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগে চাপ দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি সহযোগি হিসেবে বিএসইসির চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদকে সঙ্গে নিয়েছিলেন বলে ওইসময় অভিযোগ উঠেছিল।

এ কারনে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মলেনে রাশেদ মাকসুদের কাছে মেধাবী কমিশনার তারিকুজ্জামানকে পদত‍্যাগে বাধ‍্য করানোর কারন জানতে চায় সাংবাদিকেরা। সরকার তারিকুজ্জামানের মতো মেধাবী কমিশনারকে অব‍্যাহতি দেওয়া নিয়ে মাকসুদ কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা, কেনো তাকে দপ্তরবিহীন করলেন, কেনো পদত‍্যাগে বাধ‍্য করলেন, বিএসইসিতে স্বৈরাচারীতা কেনো ইত‍্যাদি প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা।

এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি বিএসইসি চেয়ারম্যান। শুধু বলেন সরকারের সঙ্গে আলাপ করে সব হয়েছে। কিন্তু বিএসইসি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান সত্ত্বেও সরকার কিভাবে তারিকুজ্জামানকে দপ্তরবিহীন করে? এক্ষেত্রে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে চলে যান। তবে সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে যান।

অথচ ড. এটিএম তারিকুজ্জামান রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সবচেয়ে যোগ্য ও জ্ঞানী কমিশনার ছিলেন। যার ২৭ বছরেরও অধিক সময় শেয়ারবাজারের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি কমিশনার হিসেবে গত বছরের ২০ মে যোগ দেওয়ার আগে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডিএসইতে যোগদানের আগে তিনি বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া দেশ-বিদেশের বহু সনদ রয়েছে ষড়যন্ত্রের স্বীকার সাবেক এই কমিশনারের।

ড. তারিকুজ্জামান নিউজিল্যান্ড এর Victoria University of Wellington এ উচ্চ বেতনে শিক্ষকতা করছিলেন। তবে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য তার ভাগিনা বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিকের মত দেশে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু রাশেদ মাকসুদ আর নাহিদ হোসেন এর ষড়যন্ত্রে টিকতে না পেরে তিনি পুনরায় নিউজিল্যান্ডে উচ্চ বেতনের শিক্ষকতা পেশায় চলে যান।

তারিকুজ্জামানকে সরাতে ওইসময় নাহিদ ফোন করে অর্থ উপদেষ্টার নাম ভাঙ্গিয়ে ড. তারিকুজ্জামানকে পদত্যাগ করতে বলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ড. সালেহউদ্দিন তাকে দ্রুত ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠাতে বলেছেন। কিন্তু অর্থ উপদেষ্টার দপ্তর সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছিল, এ ধরনের কথা তিনি বলেননি। অতিরিক্ত সচিবের এ ধরনের কাণ্ডে বিস্ময় প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়াও কমিশনার তারিকুজ্জামানের পদত্যাগ চেয়ে অর্থ উপদেষ্টার কাছে শিক্ষার্থীদের নাম করে একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে কারও স্বাক্ষর নেই। এক্ষেত্রে নাহিদ ছাত্রদেরকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠে।

নাহিদ একজন কমিশনারকে নিয়ে এমন ষড়যন্ত্র করলেও বিএসইসি চেয়ারম্যান তারই নেতৃত্বাধীন কমিশনের সদস্যের পাশে দাঁড়াননি। বরং তাকে সরাতে ভূমিকা রাখেন বলে অভিযোগ উঠে। যার সরে যাওয়ার পরে পুরো কমিশনই এখন অযোগ্য বলে সবমহলে পরিচিত।

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে